জলমগ্ন খানাকুলের বিস্তীর্ণ এলাকা। —নিজস্ব চিত্র।
সামনেই উৎসবের মরসুম। কিন্তু তার আগে সব আলো যেন নিভে গিয়েছে খানাকুলে। রূপনারায়ণের জল গ্রাস করেছে বহু এলাকা। কবে ফের স্বাভাবিক জনজীবন শুরু হবে তা জানা নেই খানাকুলবাসীর।
বসতবাড়ি, জমি, রাস্তাঘাট, দোকান-বাজার, আড্ডাখানা এ সব চেনা পরিচিত জায়গা বিলকুল বদলে গিয়েছে খানাকুলবাসীর কাছে। এখন সেখানে কোথাও বুক জল, কোথাও বা তারও বেশি। রূপনারায়ণের জল ভাসিয়ে দিয়েছে হুগলির ওই অংশের বিস্তীর্ণ এলাকা। শোচনীয় অবস্থা দক্ষিণ খানাকুলের ধান্যঘড়ি, জগৎপুর, শাবলসিংহপুর রাজহাটি এক, রাজহাটি দুই, মাড়োখানার মতো পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের। ওই এলাকায় জলবন্দি হয়ে পড়েছেন বহু মানুষ।
খানাকুলেরই বাসাবাটি গ্রামের বাসিন্দা কমলা বারিক ত্রাণ নিতে এসেছিলেন নৌকায় চড়ে খানাকুল ব্লকের দফতরে। তাঁর কথায়, ‘‘বাড়িতে খাবারদাবার নেই। শিশুরা কান্নাকাটি করছে। তাই নৌকা চড়েই খাবার নিতে এসেছি। আমি বাড়ি ফিরলে সকলে খেতে পাবে।’’ একই অবস্থা বান্নানের বাসিন্দা শ্রীকান্ত মণ্ডলেরও। তিনি বলছেন, ‘‘ঘরদোর সব ডুবে গিয়েছে। এখন এক জনের বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছি। খাবার পাওয়া যাচ্ছে শুনে এসেছি। যদি পরিবারের সদস্যদের মুখে কিছু খাবার তুলে দিতে পারি এই আশায়।’’
জমি জলের তলায়। একশো দিনের কাজ নেই। অন্যান্য কাজকর্মও লাটে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে ত্রাণ নিয়ে জিজ্ঞাসা বাড়ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। রাজহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দেবাশিস সামুই যেমন বলছেন, ‘‘রূপনারায়ণ নদ যদি এমন রাক্ষস হয়ে ওঠে তা হলে কিছু করার নেই। খানাকুলে যত মানুষ আছেন সেই পরিমাণ ত্রাণ এখনও এসে পৌঁছয়নি। আমরা চেষ্টা করছি গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর।’’