আদালতের নির্দেশে বাড়িতে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
অনেক আশা নিয়ে বিয়ে দিয়েছিলেন ছেলের। কিন্তু বিয়ের পর থেকে বৌমার হাতে নিপীড়িত হতে থাকেন। ছেলে তা দেখেও যেন দেখে না। বৃদ্ধ বয়সে এক প্রকার গৃহবন্দি হয়ে থাকতে হচ্ছিল উত্তরপাড়ার বাসিন্দা প্রতাপ এবং অঞ্জনা মুখোপাধ্যায়কে। বাধ্য হয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন ওই বৃদ্ধ দম্পতি। তার পরই ছেলে এবং বৌমকে বাড়়ি থেকে বার করে দেওয়ার নির্দেশ দেন হাই কোর্টের বিচারপতি। আদালতের নির্দেশে পুলিশ সোমবার প্রতাপের ছেলে-বৌমাকে বাড়ি থেকে বার করে দিয়েছে।
উত্তরপাড়ায় ১৮/এ ভবানী সেন সরণিতে থাকতেন প্রতাপ এবং অঞ্জনা। তাঁদের অভিযোগ, ছেলে-বৌমা একতলার ঘরে তাঁদের বন্দি করে রাখতেন। গত কয়েক মাস ধরে তাঁদের দোতলার ঘরে ঢুকতে দেওয়া হত না, সিঁড়ি দিয়েও উঠতে দেওয়া গত না বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে স্থানীয় পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই তাঁরা। প্রশাসনের মীমাংসা মানেননি তাঁদের ছেলে এবং বৌমা। এর পর ২১ জুন কলকাতা হাই কোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন বৃদ্ধ দম্পতি। ২৭ জুন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা, বৃদ্ধ দম্পতির ছেলে-বৌমাকে বাড়ি তেকে বিতাড়িত করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন। বিচারপতি জানিয়েছিলেন, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ছাড়া ওই বাড়িতে আর কারও অধিকার নেই। এমনকি বাড়িতে ঢুকতে গেলে ছেলে-বৌমাকে বাবার অনুমতি নিয়ে ঢুকতে হবে।
হাই কোর্টের নির্দেশ মতো, সোমবার উত্তরপাড়া থানার পুলিশ যায় প্রতাপের বাড়ি। ছেলে সুশান্ত এবং বৌমা পম্পাকে বার করে দেয় বাড়ি থেকে। তাঁদের জিনিসপত্রও বার করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে প্রতাপ এবং অঞ্জনা বলেছেন, ‘‘ছেলেকে বাড়ি থেকে বার করে দিতে মন চায়নি। ২০১৩ থেকে যে ভাবে অত্যাচারের শিকার হয়েছি, এ ছাড়া উপায় ছিল না।’’ তবে বাবা-মাকে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে সুশান্ত বলেছেন, ‘‘বিয়ের পর থেকেই অশান্তি শুরু হয়। বাবা-মা বিবাহবিচ্ছেদ করতে বলেন। আমি তা করিনি বলেই এই পরিস্থিতি।’’