—প্রতীকী চিত্র।
মনোনয়ন পর্বে সে ভাবে তাদের মুখে শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ শোনা যায়নি। তবুও, দলের শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলায় সব মিলিয়ে ১৬৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে প্রার্থীই দিতে পারেনি রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। যদিও, ভোট ঘোষণার অনেক আগে থেকে তারা দাবি করে এসেছিল, নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য একেবারে বুথ স্তর পর্যন্ত তাদের সংগঠন তৈরি। এখন প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি সাংগঠনিক দুর্বলতায় তারা অত আসনে প্রার্থী দিতে পারল না?
বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য এ জন্য শাসক দলের সন্ত্রাসের তত্ত্বকেই খাড়া করেছে। বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার হিসাবে গ্রাম পঞ্চায়েতে এ বার মোট আসন ৬৩৪টি। তার মধ্যে বিজেপির প্রার্থী রয়েছে ৪৭০টি আসনে। অর্থাৎ ১৬৪টিতে নেই। এই এলাকার ৯২টি পঞ্চায়েত সমিতি আসনের মধ্যে পদ্ম-প্রার্থী আছেন ৮০টিতে।
বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মোহন আদকের দাবি, ‘‘গ্রামাঞ্চলে তৃণমূলের সন্ত্রাসের কারণেই আমাদের কিছু প্রার্থী পিছিয়ে যান। আমরা তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম, কোনও সমস্যা হলে দল পাশে থাকবে। কিন্তু, তাঁরা ভরসা পাননি। আমাদের পক্ষে ২৪ ঘণ্টা দলের কোনও প্রার্থীকে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতির কারণেই কিছু আসন ফাঁকা থেকে গিয়েছে।’’
এ নিয়ে তৃণমূলের শ্রীরামপুর-হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘বিজেপি প্রার্থী খুঁজে না পেলে আমাদের কী করার আছে? সন্ত্রাসের অভিযোগ ওদের পুরনো কাটা রেকর্ড।’’
সিপিএমও প্রত্যেক আসনে প্রার্থী দেয়নি। তবে তারা এ বারের ভোটে শাসকের ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ তোলেনি। সিপিএমের জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘এ বার এখানে সন্ত্রাসের আবহ সে ভাবে ছিল না। আমরা কংগ্রেস এবং আইএসএফের জন্য কিছু আসন ছেড়ে রেখেছিলাম। সেই কারণেই আমাদের প্রতিটি আসনে প্রার্থী নেই।’’
নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গোটা হুগলি জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট আসন ৩৮৮০টি। তার মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা আসনের সংখ্যা ৩৯৮টি। অর্থাৎ, মোট আসনের ১০ শতাংশের সামান্য বেশি। আর পঞ্চায়েত সমিতির ৬১৯টির মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা আসন ৫৮টি। অর্থাৎ, ১০ শতাংশের সামান্য কম।
কোন দলের কত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন, তার হিসাব কমিশন দেয়নি। তবে, অধিকাংশই তৃণমূলের বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর। এ বার অবশ্য হুগলি জেলা পরিষদের ৫৩টি আসনেই লড়াই হবে।