বছর দুয়েক আগে ইউক্রেনের খারকিভের ন্যাশনাল মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে ডাক্তারি পড়তে গিয়েছিলেন দেবারতি দাস।
ভোর রাতে হঠাৎ বোমাবর্ষণ শহরে। ঘন ঘন সাইরেনের শব্দ। প্রাণে বাঁচতে ন’তলা হস্টেলের নীচের বাঙ্কারে আশ্রয় নিতে হয়েছে মেয়েকে। ভিডিয়ো কলে তাঁর মুখে যুদ্ধবিদ্ধস্ত ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতির কথা শুনে ঘুম উড়েছে হাওড়ার ইছাপুর-শিয়ালডাঙার দাস পরিবারের। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে মা রূপালি দাসের আর্জি, ‘‘যে ভাবেই হোক, আমার মেয়েকে ফিরিয়ে আনুন।’’
বছর দুয়েক আগে ইউক্রেনের খারকিভের ন্যাশনাল মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে ডাক্তারি পড়তে গিয়েছিলেন দেবারতি দাস। এত কাল ইউক্রেন ও রাশিয়ার সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা থাকলেও শান্তই ছিল খারকিভ। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে সেনা অভিযানের সিদ্ধান্ত নিতেই বদলে গিয়েছে সব। সরকারি নির্দেশ মেনেই দেবারতি ও তাঁর বন্ধুবান্ধব-সহ কয়েক জন আশ্রয় নিয়েছেন হস্টেলের বাঙ্কারে। সঙ্গে খাবার যা রয়েছে, তাতে আর কয়েক ঘণ্টা টেনেটুনে চলতে পারে, মা রূপালিকে এমনটাই জানিয়েছেন দেবারতি।
আপাতত ভিডিয়ো কলেই মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে দাস পরিবার। কিন্তু পরিস্থিতি যে ভাবে প্রতি মুহূর্তে বদলে যাচ্ছে, তাতে এই যোগাযোগ ব্যবস্থা কত ক্ষণ থাকবে, জানেন না রূপালি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা কী অবস্থার মধ্যে রয়েছি, তা আমরাই জানি। মেয়ের সঙ্গে কথা বলার পর আমাদের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে।’’
নাওয়া-খাওয়া ভুলে সারা দিন টিভির সামনেই বসে রয়েছেন রূপালি। মেয়েকে কী ভাবে ফিরিয়ে আনবেন, এখন সেই চিন্তাই গ্রাস করেছে গোটা পরিবারকে। রূপালি বলছেন, ‘‘টিভিতে দেখলাম, ইউক্রেনে আর ভারতের বিমান যেতে পারছে না। এ বার মেয়েকে ফিরিয়ে আনব কী করে। কেন্দ্র ও রাজ্য দুই সরকারের কাছেই আমাদের আর্জি, দয়া করে ওকে আর বাকি যাঁরা আটকে রয়েছেন, সবাইকে ফিরিয়ে আনুন।’’