স্থানীয় তৃণমূল নেতা খলিল আহমেদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেছেন হাওড়ার ব্যবসায়ী সত্যজিৎ জাঠি। —নিজস্ব চিত্র।
নিজের জমির দখল ছাড়ার জন্য তৃণমূলের পার্টি অফিস ডেকে পাঠিয়েছিল ব্যবসায়ীকে। তবে সেখানে হাজিরা না দেওয়ায় দলবল নিয়ে তাঁর অফিসে ঢুকে মারধর করেছেন হাওড়ার এক তৃণমূল নেতা— এই অভিযোগে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন হাওড়ার এক ব্যবসায়ী। তাঁর দাবি, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে মারধরের ঘটনা ধরা পড়লেও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়নি। ফলে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। যদিও মারধরের ঘটনায় তিনি জড়িত নন বলে দাবি ওই তৃণমূল নেতার। অন্য দিকে, দলের তরফে এর তদন্ত করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে তারা।
হাওড়ার পাঁচলা থানার জুজারসা এলাকার বাসিন্দা সত্যজিৎ জাঠি কাপড়ের ব্যবসা করেন। তাঁর দাবি, কুলডাঙ্গা বাজার এলাকায় তাঁর মালিকানাধীন জমি রয়েছে। সেটি তাঁর দখলে থাকলেও তা নিয়ে পাশের জমির মালিকের সঙ্গে বিবাদ চলছিল। সত্যজিতের অভিযোগ, ওই জমির দখল ছাড়ার জন্য বৃহস্পতিবার তাঁকে পার্টি অফিসে ডেকে পাঠিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা খলিল আহমেদ। তবে তিনি সেখানে যাননি। এর পর তাঁর অফিসে দলবল নিয়ে চলে আসেন খলিল। তাঁকে বেধড়ক মারধর করা ছাড়াও গালিগালাজ করেন। সত্যজিতের আরও অভিযোগ, তাঁর কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন খলিল। কিন্তু তিনি দিতে রাজি হননি। সেখানে না যাওয়ায় তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকিও দেন খলিল। এর পর নিজেই দলবল নিয়ে এসে তাঁকে, তাঁর দাদা এবং ভাইপোকে মারধর করেন। সে ছবি ধরা পড়েছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে। এর পর রাতে এসে সিসি ক্যামেরার হার্ড ডিস্ক খুলে নিয়ে চলে যান। সত্যজিৎ বলেন, ‘‘আমি, আমার পরিবারের লোকজন সকলে আতঙ্কে রয়েছে। পুলিশ আমাদের নিরাপত্তা দিক। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করুক। এটাই চাই।’’
সত্যজিতের অভিযোগ নিয়ে ক্যামেরার সামনে মন্তব্য করতে চাননি খলিল। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার এলাকায় ছিলাম না। ওই ব্যবসায়ী মিথ্যে অভিযোগ করছেন। আমি কোনও টাকাপয়সা দাবি করিনি।’’ যদিও এই অভিযোগের তদন্ত করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তৃণমূলের হাওড়া সদরের সভাপতি কল্যাণ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। আইন আইনের পথে চলবে। আলাদা করে তদন্ত করবে দল। দোষ প্রমাণিত হলে খলিল আহমেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, গোটা ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে তারা। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।