বর্ষাতেই হাওড়া পুরসভা এলাকার ৫০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৫টি ওয়ার্ড জলে ডুবে থাকে। ফাইল ছবি।
গ্রীষ্মেই শুরু হয়ে যাচ্ছে বর্ষার প্রস্তুতি। গত বছর বর্ষার আগেই নিকাশির সংস্কার করে যে সুফল পাওয়া গিয়েছিল, তা এ বারও ধরে রাখতে সামনের মার্চ মাস থেকেই নিকাশি নালাগুলি থেকে পলি তুলে ফেলার কাজ শুরু করছে হাওড়া পুরসভা। পুরসভা সূত্রের খবর, গত বছর আগাম এই কাজ করায় শহরে জল অনেকটাই কম জমেছিল বা জমলেও দ্রুত নেমে গিয়েছিল। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বারও তাই বর্ষার অনেক আগেই ৫০টি এজেন্সিকে দিয়ে ৫০টি ওয়ার্ডে নর্দমা সংস্কারের কাজ শুরু হবে।
প্রতি বর্ষাতেই হাওড়া পুরসভা এলাকার ৫০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৫টি ওয়ার্ড জলে ডুবে থাকে। অভিযোগ, পুরো শহরে যথেচ্ছ বেআইনি বহুতল নির্মাণ হলেও নিকাশি পরিকাঠামোর কোনও পরিবর্তন হয়নি। তার উপরে কয়েক দশক ধরে নর্দমাগুলি থেকে পলি না তোলার ফলে সেগুলির জলবহন ক্ষমতা কমে গিয়েছে। তাই সামান্য বৃষ্টিতেই বানভাসি হয় হাওড়া শহর। সেই জল জমেও থাকে দীর্ঘদিন।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১০ থেকে ১২টি ওয়ার্ডে নিকাশি নালাগুলি সংস্কারের অভাবে অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় রয়েছে। এই সব ওয়ার্ডের নিকাশি নালা বিশেষ ভাবে পরিষ্কার করা হবে। যেমন, টিকিয়াপাড়ার ১৯, ২০, ২১ নম্বর ওয়ার্ড, রামরাজাতলার ৪৪, ৪৫, ৫০ নম্বর ওয়ার্ড, উত্তর হাওড়া ও বেলগাছিয়ার ৩, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের নাম রয়েছে এর মধ্যে। উত্তর হাওড়া ও হাওড়া ময়দানের কাছে বিপ্লবী হরেন ঘোষ সরণিতে নিকাশির জন্য বিশেষ পাইপলাইন বসানোর কাজও হবে। এ ছাড়া, জমা জল বার করতে হাওড়া পুরসভা ও কেএমডিএ-র মোট ৩টি জেট সাকশন যন্ত্র ব্যবহারের পরিকল্পনাও করা হয়েছে।
হাওড়া পুরসভার মুখ্য চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নিকাশি সংস্কার ঠিক মতোসম্পন্ন হলে জল জমলেও অনেক কম সময়ে তা সরিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে। শহর জুড়ে কী ভাবে নিকাশির সংস্কার হবে, তা নিয়ে ইতিপূর্বেইএইচআইটি, রেল, কেএমডিএ ও সেচ দফতরের সঙ্গে পুরসভায় একটি সমম্বয় বৈঠক হয়েছে। এর জন্য ১৪ কোটি টাকা খরচ হবে।’’
উল্লেখ্য, হাওড়া শহরে বর্তমানে জমা জল সরাতে ৫০টি পাম্প চলে। এর মধ্যে ১২টি রয়েছে পাম্প হাউসে। বর্ষায় প্রয়োজনে আরও অস্থায়ী পাম্প বসানো হবে বলে জানিয়েছেন সুজয়। অন্য দিকে, বর্ষায় ভ্যাট উপচে রাস্তা যাতে নোংরা না হয়, সেই জন্য শহরের মূল রাস্তাগুলির ভ্যাটে দরজা বসানোর কাজ করছে পুরসভা। ইতিমধ্যেই ১৪টি ভ্যাটে দরজা বসানোর জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছে। মূল রাস্তার ধারে থাকা পাঁচটি ভ্যাটে দরজা বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, শহরে যে মোট ২৮০টি ভ্যাট রয়েছে, তার মধ্যে ৪০ শতাংশ ভ্যাটই মূল রাস্তায় রয়েছে। যেমন বেলিলিয়াস রোড, ইস্ট-ওয়েস্ট রোড,সালকিয়া চৌরাস্তার মতো জায়গায় রাস্তার ভ্যাটে দরজা বসানোর কাজ হবে।