হাওড়া জেলা হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
জমি-জটের জেরে কেন্দ্রীয় বরাদ্দের অর্থ ফেরত চলে যাওয়ার যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, সেই সমস্যা প্রায় ন’মাস পরে মিটল। অবশেষে হাওড়া জেলা হাসপাতালের ভিতরেই ১০০ শয্যার ‘ক্রিটিক্যাল কেয়ার ব্লক’ বা সিসিবি তৈরির প্রশাসনিক অনুমোদন হাতে পেল হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের অর্থ দফতরও এই প্রকল্পের জন্য প্রায় ৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, আগামী দেড় বছরের মধ্যে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট একটি সাততলা ভবন তৈরির কাজ শেষ করতে রাজ্য সরকার পূর্ত দফতরকে নির্দেশ দিয়েছে। ভবনটির নকশার একটি মডেলও তৈরি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
কেন্দ্রের সু-স্বাস্থ্য প্রকল্পের আওতায় গত মার্চে রাজ্য কয়েকটি জেলায় ‘ডিস্ট্রিক্ট ইন্টিগ্রেটেড পাবলিক হেল্থ ল্যাবরেটরি’ বা ডিআইপিএইচএল এবং ১০০ শয্যার ২২টি সিসিবি তৈরির জন্য কেন্দ্রের অনুমোদন পায়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, যে সমস্ত জেলা হাসপাতালের অধীনে এই দু’টি প্রকল্প হওয়ার কথা, তার মধ্যে হাওড়া জেলা হাসপাতালও রয়েছে। ওই হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে ১০০ শয্যার সিসিবি এবং ডিআইপিএইচএল তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। বাকি ১০০ শয্যার সিসিবি হবে হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়া ও জলপাইগুড়িতে। ৫০টি শয্যার সিসিবি হওয়ার কথা দক্ষিণ দিনাজপুর, আলিপুরদুয়ার ও ঝাড়গ্রামে।
হাওড়া জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, এই দুই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যে অন্য কয়েকটি জেলায় শুরু হয়ে গেলেও হাওড়ায় জমি-জটে তা আটকে যায়। এমনকি, কেন্দ্রের টাকাও ফেরত চলে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেই খবর প্রকাশ্যে এলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর নড়েচড়ে বসে। এর পরেই গত সোমবার জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে ১০০ শয্যার একটি আধুনিক মানের সিসিবি তৈরির জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন পাঠায় রাজ্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর। তবে, এখনও পর্যন্ত ডিআইপিএইচএল তৈরির অনুমোদন মেলেনি বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানান। তিনি বলেন, ‘‘ওই প্রকল্পেরও অনুমোদন হয়ে যাবে শীঘ্রই। সিদ্ধান্ত হয়েই আছে। ওই হাসপাতালের নিউ বিল্ডিংয়ের তেতলার ছাদে চার হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে তৈরি হবে ডিআইপিএইচএল বা আধুনিক মানের ল্যাবরেটরি।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০০ শয্যাবিশিষ্ট যে সাততলা সিসিবি ভবন তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে, সেটি হবে হাসপাতালের এস এন দাস ভবন ও নিউ বিল্ডিংয়ের সামনে, বর্তমানে যেখানে সেন্ট্রাল কিচেন রয়েছে, সেই জায়গায়। ওই ভবনে থাকবে আধুনিক মানের অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা, বিপদঘন্টি, উন্নত মানের লিফ্ট এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাই মণ্ডল বলেন, ‘‘১০০ শয্যার এই ক্রিটিক্যাল কেয়ার ব্লক তৈরি হয়ে গেলে শুধু হাওড়া জেলা নয়, দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার বহু মানুষ উপকৃত হবেন। গুরুতর অসুস্থ রোগীদের আর বেসরকারি হাসপাতালে যেতে হবে না। গুরুতর অসুস্থ সদ্যোজাতরাও এখানে ভর্তি হতে পারবে।’’