পূর্ত দফতরের উল্টো দিকে এই নির্মাণ নিয়েই বিতর্ক। আরামবাগের পল্লিশ্রী এলাকায়। —নিজস্ব চিত্র।
আরামবাগ শহরের ২ নম্বর রাজ্য সড়কের গায়ে জলাশয় ভরাট করে বেআইনি ভাবে হকার্স কর্নার তৈরির অভিযোগ উঠেছিল পুরসভার বিরুদ্ধে। পূর্ত দফতরের মহকুমা কার্যালয়ের ঠিক উল্টো দিকে ওই নির্মাণ নিয়ে স্থানীয় মানুষ এবং পূর্ত দফতরের অভিযোগের ভিত্তিতে কাজটি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মহকুমাশাসক। অবশেষে সিদ্ধান্ত হয়েছে জলাশয়টি আস্ত রেখে পুরসভা সেই নির্মাণ করা যাবে।
আজ, সোমবার থেকে ফের কাজের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে জানিয়ে পুরপ্রধান সমীর ভান্ডারী বলেন, “পূর্ত দফতরের রাস্তার গায়ে ওই জায়গাটা জেলা পরিষদের নামে। জেলা পরিষদ জায়গাটা আমাদের দিয়েছিল। মহকমাশাসকের ডাকা শুনানিতে শর্ত হয়েছে, জলাশয় বাঁচয় এবং প্রয়োজনীয় নিকাশি নালার ব্যবস্থা করে হকার্স কর্নার করা যাবে।’’ তিনি জানান, জলাশয়ে গার্ডওয়াল দেওয়ার নির্দেশে আড়াআড়ি পরিসর কিছুটা কম হলেও হকারদের পুনর্বাসনের জন্য এটা খুব জরুরি ছিল। জায়গাটিতে খান ২০টি দোকান ঘর করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
মহকুমাশাসক সুভাষিণী ই বলেন, “জায়গার মালিকানা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজ দেখিয়েছে পুরসভা। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জলাশয় ভরাট করা যাবে না। জলাশয়ে গার্ডওয়াল দিয়ে নির্মাণ করা যাবে। ওখানে নিকাশি নালারও ব্যবস্থা করতে হবে পুরসভাকে।’’
এ দিকে, শহরের ভিতরে মূল রাস্তার গায়ে হকার্স কর্নার নির্মাণের ছাড়পত্র নিয়ে পূর্ত দফতরের একাংশ ক্ষুব্ধ। কয়েক জন বাস্তুকারের অভিযোগ, গত ২০১৭ সাল থেকে শহরের মধ্যে পূর্ত দফতরের রাস্তার গায়ে জায়গা দখল করে পুরসভার উদ্যোগে পল্লিশ্রী, দৌলতপুর এবং কালীপুরে তিনটি হকার্স কর্নার বানানো হয়েছে। এ বার সরাসরি মহকুমা কার্যালয়ের সামনেই এই নির্মাণ নিয়ে তাঁদের দাবি, নির্মাণটি বেআইনি। সংশ্লিষ্ট আরামবাগ-বর্ধমান রোডের গায়ে ওই ১১৮ নম্বর দাগটি নয়ানজুলি বলে রেকর্ড আছে। জায়গার মালিকানা যাঁদেরই থাকুক, নয়নজুলির উপর নির্মাণ আইনসিদ্ধ নয়।
ওই বাস্তুকারদের খেদ, এই সব বেআইনি নির্মাণে জেরে কলকাতার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের অনেকগুলি জেলার যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি ভবিয্যতে সম্প্রসারণের সম্ভবনা নষ্ট হচ্ছে। একই উদ্বেগ প্রকাশ করে সাধারণ নাগরিকদেরও অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কড়া নির্দেশ দিলেও খোদ পুরসভাই তা মানছে না।