শ্যামপুর গড়চুমুক বাসুদেবপুরে হুগলি নদীতে বুধবার বেলা এগারোটা নাগাদ দুটি জাহাজ দুদিকে যাওয়ার সময় একটি জাহাজ আরেকটি জাহাজকে পাশ দিতে গিয়ে কলকাতা মুখি একটি জাহাজ পাড়ে এসে ধাক্কা মারে। —নিজস্ব চিত্র
কলকাতা বন্দরে যাওয়ার পথে স্টিয়ারিং কাজ না-করায় মালয়েশিয়া থেকে আসা একটি পণ্যবাহী জাহাজ বুধবার দুপুরে ধাক্কা মারল হাওড়ার শ্যামপুরের গড়চুমুকে, হুগলি নদীর পাড়ে। ১৪০ মিটার লম্বা কন্টেনারবোঝাই জাহাজটিকে ধাক্কা মারতে দেখে গ্রামবাসীরা আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠেন। মুহূর্তে সেখানে ভিড় জমে যায়। তবে, এই দুর্ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
কলকাতা বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘এমটিটি সিঙ্গাপুর’ নামে ওই জাহাজটি পণ্য নিয়ে মালেশিয়ার কেলং বন্দর থেকে আসছিল। জাহাজটিতে ৩৩৮টি কন্টেনার রয়েছে। তবে, কোনও কন্টেনারেই কোনও বিপজ্জনক বস্তু নেই। জাহাজটি চালাচ্ছিলেন ফিলিপিন্সের মাস্টার। এ ছাড়াও জাহাজে ২০ জন ক্রু আছেন। তাঁরা ফিলিপিন্স এবং মালয়েশিয়ার নাগরিক। সকলেই নিরাপদে আছেন।
কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে সিনিয়র জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কলকাতা এবং হলদিয়া বন্দর থেকে দু’টি আলাদা উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে গিয়েছে। দ্রুত জাহাজটিকে তার গতিপথে আনা হবে। উদ্ধারকারী দল দু’টি প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, ক্রেন— সবই নিয়ে গিয়েছে। তারা কাজ শুরু করেছে।’’
দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে যান্ত্রিক ত্রুটির কথা উঠে এসেছে বন্দর কর্তৃপক্ষের করা প্রাথমিক তদন্তে। বন্দরের এক আধিকারিক জানান, জাহাজের স্টিয়ারিং কাজ করছিল না। জাহাজটিকে কলকাতায় আনার জন্য বন্দরের পাইলট লঞ্চ ছিল। কিন্তু জাহাজটির স্টিয়ারিং কাজ না করায় দুর্ঘটনা এড়ানো যায়নি।
বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, দুর্ঘটনাগ্রস্ত জাহাজটি আসছিল কলকাতা নেতাজি সুভাষ ডকে। জাহাজটির বিপরীত দিক থেকে আসছিল আরও একটি পণ্যবাহী জাহাজ। সেটি যাচ্ছিল হলদিয়ায়। সহসা দু’টি জাহাজ বেশ কাছাকাছি এসে পড়ে। হলদিয়াগামী জাহাজটিকে জায়গা দিতে গিয়ে কলকাতাগামী জাহাজটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নদীর পাড়ের দিকে চলে আসে। তার পরে গড়চুমুকের পাড়ে এসে গোঁত্তা মারে।
আজ, বৃহস্পতিবারই জাহাজটি রওনা দিতে পারবে বলে কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি। জাহাজের ধাক্কায় নদীর পাড়ে থাকা মাছ ধরার নৌকাগুলি দুলতে থাকে। মাঝিরা চিৎকার শুরু করে দেন। খবর পেয়ে পুলিশ আসে। ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে তারা হিমশিম খেয়ে যায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ এবং র্যাফ মোতায়েন হয়।