বন্ধ ওয়াটার এটিএম। গোঘাটের কামারপুকুর ডাকবাংলোতে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
চৈত্রেই জ্বালা ধরাচ্ছে রোদ। গরম বাড়ছে। কিন্তু হুগলি জুড়ে জেলা পরিষদের বসানো ১৪টি ‘ওয়াটার এটিএম’-এর একটি থেকেও একবিন্দু জল মিলছে না। কারণ, মাস পাঁচেকেও পরিস্রুত ঠান্ডা পানীয় জলের যন্ত্রগুলি চালুই হয়নি। ফলে, এক-একটি যন্ত্রের পিছনে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা খরচ করে লাভ কী হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পরিষেবা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ মানুষ।
জেলা পরিষদের ডিস্ট্রিক ইঞ্জিনিয়ার মহাজ্যোতি বিশ্বাস বলেন, “বিদ্যুৎ-সহ পরিকাঠামো গড়ার প্রক্রিয়া শেষের মুখে। প্রথম দফায় বসানো ১৪টি যন্ত্র চলতি মাসেই চালু করা হবে। জেলার বিভিন্ন ব্লকে জন সমাগম হয়, এমন মোট ৩২টি জায়গায় ওয়াটার এটিএম হবে। প্রথম দফায় ২০টির ছাড়পত্র মিলেছে। তার মধ্যে ১৪টির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। বাকিগুলোরকাজ চলছে। দ্বিতীয় দফায় অনুমোদন হওয়া ১২টির ওয়ার্ক-অর্ডার হয়ে গিয়েছে। সেগুলি বসানোর কাজও শীঘ্র শুরু হবে।’’
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুলভে সাধারণ মানুষকে বছরভর ঠান্ডা পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ করতেই কেন্দ্রীয় পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকায় এই যন্ত্র বসানো হচ্ছে। লিটারপ্রতি ১-২ ধার্য করা হবে। এই যন্ত্র ভূগর্ভ থেকে তোলা জলে মিশে থাকা লোহা-সহ বিভিন্ন যৌগ এবং জীবাণু, গন্ধ বা অপ্রীতিকর স্বাদ স্বয়ংক্রিয় ভাবে অপসারণ করবে।
গত নভেম্বর মাসেই গোঘাট-২ ব্লকের কামারপুকুর ডাকবাংলো এলাকা, গোঘাট-১ ব্লকের রেজিস্ট্রি অফিস সংলগ্ন এলাকা, খানাকুল-১ ব্লকের ময়াল বাজার, ধনেখালি বাস স্ট্যান্ড-সহ জেলার ১৪টি জায়গায় জলের এটিএম বসানো হয়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে কামারপুকুর, ময়াল-সহ কয়েকটির উদ্বোধন হয়। কিন্ত এখনও কোথাও বিদ্যুৎ সংযোগ হয়নি বলে অভিযোগ।
গোঘাট-১ ব্লকের রেজিস্ট্রি অফিসের কাছেই আরও তিনটি সরকারি কার্যালয় আছে। উপ-ডাকঘর, প্রাণিসম্পদ বিকাশ বিভাগ এবং ব্লক কৃষি দফতর। সব দফতর মিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে শ’পাঁচেক মানুষের জমায়েত হয়। সেখানে জলের এটিএম বসানোয় মানুষ উৎফুল্ল ছিলেন। কিন্তু গরম পড়ে গেলেও তা চালু না হওয়ায় তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।জমি সংক্রান্ত কাজে ওই রেজিস্ট্রি অফিসে প্রায়ই আসতে হয় সুন্দরপুরের শেখ রহমত আলিকে। তাঁর খেদ, ‘‘বলা হয়েছিল জানুয়ারি মাসেই এই জলের এটিএম চালু হবে। আশায় ছিলাম আর বোতলের জল কিনে খেতে হবে না। কিন্তু চালুই হল না। পরিষবা না পেলে এ সবের মূল্য কী?” কামারপুকুর ডাকবাংলো এলাকার ব্যবসায়ী শুভেন্দু মণ্ডল বলেন, “এখানে এমনিতেই জলের সঙ্কট আছে। গরমে জলস্তর নেমে নলকূপগুলি বিকল হতে শুরু করেছে। যন্ত্রটা বসানো এবং উদ্বোধনের পর সঙ্কট কাটবে বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু চালুই হল না।’’