Jinat

এ রাজ্যের বেলপাহাড়িতে ‘জিনাত’, বাঘিনীকে বাগে আনতে তৎপর তিন রাজ্যের বন দফতর

ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা থেকেও বনবিভাগের কর্মীরা চলে এসেছিলেন বেলপাহাড়িতে। জিপিএস ট্র্যাকারের সাহায্যে বাঘিনীর গতিবিধির উপর নজরদারি চালাচ্ছেন বিশেষ প্রশিক্ষিত কর্মীরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ ০০:৫৯
Share:

বন বিভাগের আশঙ্কা, বাঁকুড়াতেও যেতে পারে ‘জিনাত’। —প্রতীকী চিত্র।

বাঘিনী ‘জিনাত’ ঢুকে পড়েছে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি রেঞ্জের মাছগেড়িয়া জঙ্গলে। তাকে ধরতে দিনভর চেষ্টা চালাল রাজ‍্য বন দফতর। সেই সঙ্গে বেলপাহাড়িতে জারি করা হয়েছে বিশেষ সতর্কতা। সতর্ক করা হয়েছে বন দফতরের পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের কর্তাদেরও। বন বিভাগের আশঙ্কা, বাঁকুড়াতেও যেতে পারে ‘জিনাত’। তাকে ধরতে ‘টোপ’ দেওয়া হয় ছাগল সহ- বিভিন্ন গবাদি পশু। এলাকাবাসীকে সতর্ক করতে চলছে মাইক প্রচার।

Advertisement

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঘিনীটি রাতের অন্ধকারেই ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে ঝাড়গ্রামের শিমুলপাল এলাকার জঙ্গলে ঢুকে পড়েছিল। এই মুহূর্তে সে শিমুলপাল, ঠাকুরবাড়ি, কাটুচুয়া জঙ্গলে রয়েছে বলে খবর। বন দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা শুক্রবার গিয়েছিলেন বেলপাহাড়ির কাটুচুয়া জঙ্গলে। ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা থেকেও বন বিভাগের কর্মীরা চলে এসেছিলেন বেলপাহাড়িতে। জিপিএস ট্র্যাকারের সাহায্যে বাঘিনীর গতিবিধির উপর নজরদারি চালাচ্ছেন বিশেষ প্রশিক্ষিত কর্মীরা।

বাঘিনীর গতিবিধির উপর নজরদারি চালাচ্ছেন বিশেষ প্রশিক্ষিত কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গল লাগোয়া একাধিক গ্রামে মাইক প্রচার করে সতর্ক করা হচ্ছে এলাকাবাসীকে। বাঘিনীটি লোকালয়ে যাতে না আসে সেজন্য ‘টোপ’ দিয়ে ধরার চেষ্টাও করছে বনদফতর। ড্রোনের মাধ্যমেও ‘জিনাত’কে খোঁজার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

Advertisement

বাঘিনীটি লোকালয়ে যাতে না আসে সেজন্য ‘টোপ’ দিয়ে ধরার চেষ্টা করছে বনদফতর। —নিজস্ব চিত্র।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে লালগড়ের জঙ্গলে রয়‍্যাল বেঙ্গল টাইগারের হদিস মিলেছিল। প্রথম দিকে অনেকে গুজব ভাবলেও পরে ট্র্যাপ ক্যামেরায় বাঘের ছবি ধরা পড়ে। ওড়িশার সিমলিপাল থেকে বাঘটি ঝাড়খণ্ড হয়ে চলে এসেছিল লালগড়ের জঙ্গলে। ওই বছরের ১৩ এপ্রিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সদর ব্লকের গুড়গুড়িপাল থানার বাগঘোরা জঙ্গলে মৃত অবস্থায় বাঘটিকে উদ্ধার করেছিল বন দফতরের কর্মীরা।

এ বারেও ওড়িশার সিমলিপাল থেকে গুরবান্দা হয়ে সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের চাকুলিয়া রেঞ্জের রাজাবাসা জঙ্গলে পৌঁছেছিল বাঘিনী ‘জিনাত’। ঝাড়খণ্ড রাজ্যের সীমানাতেই রয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলা। সে জন্য ৯ ডিসেম্বর থেকেই জামবনি, গিধনী ও বেলপাহাড়ি রেঞ্জের ঝাড়খণ্ড সীমানাগুলিতে নজরদারি শুরু করেছিল বন দফতর। শেষ পর্যন্ত ঝাড়গ্রাম জেলায় ঢুকে পড়ে বাঘিনী ‘জিনাত’।

পাঁচ বছর আগের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় তার জন্য সচেষ্ট বনদফতর। বন্যপ্রাণ ও মানুষের সংঘাত ঠেকাতে চলছে নজরদারি। এই প্রসঙ্গে ডিএফও ঝাড়গ্রাম উমর ইমাম বলেন, ‘‘এই সময় জঙ্গলে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। এলাকায় ২৪ ঘণ্টা বন দফতরের নজরদারি থাকছে। সন্ধ্যার পর যদি বেরোনোর খুব প্রয়োজন হলে রেঞ্জ ও বিট অফিসারকে জানাবেন। তাহলে বন দফতরের গাড়ি এসকর্ট করবে। পড়শি রাজ্যের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করা হচ্ছে।’’

রাজ্যের বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা বলেন, ‘‘বাঘ সম্পর্কে অভিজ্ঞ আধিকারিকদের এলাকায় পাঠানো হয়েছে। বনদফতরের একটি উচ্চপর্যায়ের টিম অরণ্য ভবন থেকে তদারকি করছে। নজরদারি চালানো হচ্ছে। সুন্দরবন থেকেও ব্যাঘ্র বিশেষজ্ঞ টিম আসছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement