বাড়ির কল ছেড়ে এখন ভরসা রাস্তার নলকূপ। পান্ডুয়া ব্লকের বেলুন ধামাসিন পঞ্চায়েতে। নিজস্ব চিত্র
বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের কল আছে। কিন্তু তা দিয়ে সরু সুতোর মতো জল পড়ে। কোনও কোনও বাড়িতে আবার জলই পড়ে না। পান্ডুয়া ব্লকের বেলুন ধামাসিন পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা জানান, ভোটের সময় জনপ্রতিনিধিরা এলেই জলের সমস্যা মেটানোর আবেদন জানানো হয়। প্রতিশ্রুতি মিললেও সুরাহা অমিলই থেকে যায়।
বলাগড়ের এই মারশিট এলাকায় প্রায় ১২০০ পরিবারের বাস। এলাকার বাসিন্দাদের জন্য বছর নয়েক আগে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের উদ্যোগে জলপ্রকল্পের কাজটি শুরু হয়েছিল। এক বছরের মধ্যে পাইপ ও বাড়ি বাড়ি কল বসানোর কাজ শেষ হয়েছিল। তারপর ওই দফতর জল সরবরাহের দায়িত্ব হস্তান্তর করেছিল পঞ্চায়েতকে।
কেন জল নিয়ে এমন সমস্যা?
তৃণমূল পরিচালিত বেলুন ধামাসিন পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান সুজয় ধোলে বলেন, ‘‘অনেক বাড়িতে বেনিয়ম করে পাম্পের মাধ্যমে ওই জল তুলে নেওয়া হচ্ছে। সে কারণেই জলের চাপ কমে গিয়ে এই বিপত্তি।’’ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন? জবাব দেননি তিনি। তবে সুজয়ের আশ্বাস, ‘‘সমস্যা মেটাতে এলাকায় অনেকগুলি নলকূপ করা হয়েছে। সেখানে পর্যাপ্ত জল মেলে।’’
বাড়িতে কল থাকা সত্ত্বেও কেন রাস্তার নলকূপের উপর নির্ভরশীল হতে হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা। রেখা মুর্মু বলেন, ‘‘বাড়ির ওই কলের জলে সংসার চলে না। তাই অনেক দূর থেকে নলকূপের জল টেনে আনতে হয়। আর পারা যাচ্ছে না।’’ নতুন পাড়ার বাসিন্দা সুজয় সরেন বলেন, ‘‘দিনে দিনে জল সরু হতে শুরু করল। আগে একটা বালতি ভরত দু’ মিনিটে। এখন দশ মিনিট ধরে জল ভরার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।’’ গীতা মল্লিক নামে আর এক মহিলার অভিযোগ, ‘‘জলের এই সংযোগ নেওয়ার জন্য ২৬০০ টাকা জমা দিয়েছিলাম পঞ্চায়েতে। তা হলে পরিষেবা না পেলে দায় কার?’’
পঞ্চায়েত ভোটের এই সমস্যাকেই হাতিয়ার করতে চাইছে বিরোধীরা। প্রাক্তন বাম বিধায়ক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘‘আট বছর ধরে জলের এই সমস্যা চলতে পারে না। পঞ্চায়েত ইচ্ছে করেই সমাধান করছে না। ভোটে মানুষ এর জবাব দেবেন।’’ আর পান্ডুয়া মণ্ডলের বিজেপি সভাপতি অমিতাভ ঘোষের কথায়, ‘‘জল দেবে বলে মানুষের থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। মানুষ তো জবাব চাইবেনই। সব উত্তর মিলবে ভোটের ফলে।’’