নতুন জেলা কমিটি নির্বাচনের পরে সিপিএমের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব। প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে জেলা সম্মেলন শেষে। —নিজস্ব চিত্র।
সংগঠন এবং আন্দোলনের নিরিখে উত্তর কলকাতার হাল দক্ষিণের তুলনায় বেশি খারাপ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল সম্মেলনের প্রতিবেদনে। সম্মেলনের আলোচনাতেও উঠে এসেছিল সেই প্রসঙ্গ। কিন্তু সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্মেলন শেষে নতুন কমিটিতে দক্ষিণকে টেক্কা দিয়ে গেল উত্তরই! সূত্রের খবর, নবগঠিত জেলা কমিটিতে উত্তরের প্রতিনিধিত্ব কিছুটা হলেও বেশি।
প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে সোমবার রাতে শেষ হয়েছে সিপিএমের ২৬তম কলকাতা জেলা সম্মেলন। তিন দিনের সম্মেলনের শেষ দিনে গঠিত হয়েছে ৬৬ জনের নতুন জেলা কমিটি। বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য করা হয়েছে তিন জনকে। সেই কমিটিতেই সংখ্যার নিরিখে সামান্য এগিয়ে রয়েছে উত্তর কলকাতা। জেলা কমিটিতে নতুন অন্তর্ভুক্তি হয়েছে ১২ জনের। তাঁদের মধ্যে আছেন তরুণ প্রজন্মের পৌলবি মজুমদার, বিকাশ ঝা-রা। যুব সংগঠনের নেতৃত্বে থাকায় তাঁরা আগে আমন্ত্রিত হিসেবে জেলা কমিটিতে ছিলেন, এ বার পূর্ণাঙ্গ সদস্য হলেন। ‘অব্যাহতি’ নেওয়ার তালিকায় রয়েছেন সিটুর রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহু, কলকাতার সিটু নেতা দেবাঞ্জন চক্রবর্তী, বালিগঞ্জের গৌতম গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ। সিপিএম সূত্রের খবর, পুরনো জেলা কমিটির চার সদস্যের মৃত্যু হওয়ায় তাঁদের জায়গা ফাঁকা ছিল। বয়স-নীতি মেনে সরে গিয়েছেন চার জন। আরও চার জনকে ‘অব্যাহতি’ দেওয়া হয়েছে নানা কারণে। সব মিলিয়ে আগের কমিটির ১২ জন এ বারের কমিটিতে নেই। দলের কলকাতা জেলা সম্পাদক হিসেবে ফের নির্বাচিত হয়েছেন কল্লোল মজুমদার।
সিপিএমের কলকাতা জেলার এক নেতার অবশ্য ব্যাখ্যা, ‘‘উত্তর-দক্ষিণ বলে আলাদা ভাগাভাগি কিছু নেই। কলকাতা জেলার মধ্যে সব বিধানসভা এলাকা থেকে সুষ্ঠু ভাবে প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। এরিয়া কমিটিগুলির সংগঠন ও কাজের নিরিখে প্রতিনিধিত্ব রেখে সর্বসম্মত ভাবেই জেলা কমিটি গঠিত হয়েছে।’’
কলকাতা শহরে এলাকা ধরে ধরে আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ানোর ডাক দেওয়া হয়েছে সম্মেলনের জবাবি-পর্বে। বিশেষত, বস্তি এলাকায় ভেঙে পড়া সংগঠন চাঙ্গা করার কথা বলা হয়েছে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও সম্মেলনে ‘বামপন্থী বাস্তু-তন্ত্র’কে শক্তিশালী করা এবং আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছনোর বার্তা দিয়েছেন। আন্দোলন-কর্মসূচির সূত্রে মোট ১২টি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে জেলা সম্মেলনে।