গৌতম মাইতি ও মৌসুমি মাইতি।
অনুমান, স্ত্রী মৌসুমিকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে খুন করেন গৌতম মাইতি। তার পর তিনি গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন। কিন্তু কী কারণে মাইতি পরিবারে এই মর্মান্তিক পরিণতি ঘটল তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
রবিবার হাওড়ার চ্যাটার্জিহাট থানার নন্দলাল মুখার্জি লেনে একটি আবাসনের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় দম্পতির দেহ। সেই অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। তদন্তকারীদের ধারণা, পারিবারিক অশান্তি থেকেই এই ঘটনা ঘটেছে। গৌতমের বড় মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী। সে বলে, ‘‘বাবার সঙ্গে মায়ের প্রায়শই অশান্তি লেগে থাকত। মা ফেসবুক করত বলে সন্দেহ করত বাবা। এ নিয়ে বেশি ঝামেলা হত।’’
প্রতিবেশীদের সূত্রে জানা গিয়েছে বছর তিনেক আগে নন্দলাল মুখার্জি লেনের ওই ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন গৌতম। দুই মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন তিনি। কাজ করতেন একটি পানশালার ম্যানেজার হিসাবে। তাঁর আত্মীয় শম্ভু মিদ্দা বলেন, ‘‘মৌসুমি স্বাধীনচেতা ছিল। সে এক বার স্কুটি চালিয়ে গ্যাংটক যেতে চেয়েছিল। এ নিয়ে গৌতমের সঙ্গে ঝামেলাও হয়। ফেসবুক করা নিয়েও দু’জনের মধ্যে অশান্তি লেগে থাকত। দীর্ঘ দিন ধরেই ওদের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। তার যে এমন মর্মান্তিক পরিণতি হবে তা ভাবা যায়নি।’’
গৌতম এবং মৌসুমির দুই মেয়ে আপাতত তাদের মাসির বাড়িতে রয়েছে। বড় মেয়ে বলে, ‘‘বাবা অনেক রাত করে বাড়ি ফিরত। সে ভাবে সময় দিত না সংসারে। মা স্বাবলম্বী হতে চেয়েছিল। কিন্তু বাবা চাইত, মা সব সময় ঘরে থাকুক। মাকে বড় ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে বিয়ে করেছিল। মা দামি প্রসাধনী ব্যবহার করত। এ নিয়ে অশান্তিও হত। আমাদের সামনেই মাকে মারত বাবা। আমরা দুই বোন অনেক বার বারণ করেছি।’’ তার আক্ষেপ, ‘‘আমাদের দুই বোনের কথা বাবা-মা কেউই ভাবল না।’’