বন্ধ গড়চুমুক চিড়িয়াখানা। —নিজস্ব চিত্র।
‘মিনি জ়ু’ থেকে ‘স্মল’ নয়, আরও এক ধাপ এগিয়ে ‘মিডিয়াম জ়ু’তে উন্নীত হয়েছে শ্যামপুরের গড়চুমুকের চিড়িয়াখানা। ভারতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের (জ়ু অথরিটি অব ইন্ডিয়া) অনুমোদনও মিলেছে। কিন্তু শীতের মরসুম শুরু হয়ে গেলেও চি়ড়িয়াখানার তালা এখনও খোলেনি। কবে খুলবে, তারও দিনক্ষণ জানা যায়নি। নতুন করে সাজিয়ে সংলগ্ন পর্যটনকেন্দ্রটি অবশ্য সম্প্রতি খুলে দেওয়া হয়েছে।
আমপান ঝড়ের পর থেকে টানা প্রায় তিন বছর চিড়িয়াখানাটি বন্ধ থাকায় পর্যটকেরা হতাশ। এটি চালায় বন দফতর। ওই দফতর সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, এই শীতের মরসুমেই যাতে চিড়িয়াখানাটি খুলে দেওয়া যায়, তার প্রশাসনিক প্রক্রিয়া চলছে। বন দফতরের প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা বলেন, ‘‘মিনি জ়ু থেকে মিডিয়াম জ়ু-তে উন্নীত করার জন্য পরিকাঠামোগত যা যা করার কথা ছিল সেগুলি ঠিকঠাক হয়েছে। তা একবার পর্যালোচনা করে তারপরেই খুলে দেওয়া হবে।’’ কিন্তু তা কবে, সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট ভাবে তিনি কিছু জানাননি।
এই চিড়িয়াখানায় বর্তমানে রয়েছে কয়েক প্রজাতির হরিণ, শজারু, দু’টি কুমির এবং অসংখ্য প্রজাতির দেশি-বিদেশি পাখি। কয়েক বছর আগেই এটিকে মিনি থেকে মিডিয়াম জ়ু’তে উন্নীত করার কাজ শুরু করে বন দফতর। তার মধ্যেই এসে যায় আমপান এবং অতিমারি পর্ব। আমপানে পরিকাঠামোর বেশ ক্ষতি হয়। বন্ধ হয়ে যায় চিড়িয়াখানা। তার মধ্যেই অবশ্য পরিকাঠামো বৃদ্ধির কাজ চলতে থাকে। শেষ হয় মাস ছয়েক আগে।
এই চিড়িয়াখানা সংলগ্ন পর্যটনকেন্দ্রটি একটা সময়ে জেলা পরিষদ চালাত। আপাতত একটি বেসরকারি সংস্থাকে এই পর্যটনকেন্দ্রটি ইজারা দিয়েছে জেলা পরিষদ। বেসরকারি সংস্থার হাত ধরে ভোল পাল্টে এই শীতের মরসুমে নব কলেবরে খুলেছে পর্যটনকেন্দ্রটি। ওই বেসরকারি সংস্থাটির এক কর্তা মনে করছেন, চিড়িয়াখানা চালু হলে পর্যটনকেন্দ্রেও ভিড় বাড়বে। তাঁর বক্তব্য, "আমরাও চিড়িয়াখানাটি খোলার অপেক্ষায় দিন গুনছি।’’
বন দফতর সূত্রে খবর, মিডিয়াম জ়ু’তে আরও অনেক জন্তু-জানোয়ার আসবে। নেকড়ে ও হায়না আনার ব্যাপারটি চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে বলে রাজ্য বন দফতরের এক কর্তা জানান। তাঁর দাবি, এখানে বাঘও আসবে। ফলে, এই চিড়িয়াখানাকে কেন্দ্র করে দর্শকদের আগ্রহ অসীম।
জেলা পরিষদের বন ও ভূমি দফতরের কর্মাধ্যক্ষ মানস বসু বলেন, ‘‘এই চিড়িয়াখানাটির উপরে জেলার পর্যটন শিল্প অনেকটা নির্ভরশীল। আমরা সম্প্রতি জেলার বনাধিকারিককে অনুরোধ করেছি, এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী পুলক রায়ের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত চিড়িয়াখানাটি খোলার ব্যাপারে উদ্যোগী হতে।’’ মন্ত্রী পুলক বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে এ ব্যাপারে বন দফতর কোনও আলোচনা করেনি। আমি কথা বলব।’’