অবৈধ নির্মাণ। — ফাইল চিত্র।
নিয়ম ভেঙে বহু আবাসন গড়ে উঠেছে হুগলির সাত শহরে, এই অভিযোগ পেয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। কাল, সোমবার এ জন্য চার মহকুমা প্রশাসনের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটদের জেলা ভূমি দফতরে শুনানিতে ডাকা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
কিছুদিন আগে এক ব্যক্তি রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের কাছে চিঠি পাঠিয়ে অভিযোগ করেন, হুগলির সাত পুরসভার (উত্তরপাড়া-কোতরং, কোন্নগর, শ্রীরামপুর, চাঁপদানি, রিষড়া, বৈদ্যবাটী ও ডানকুনি) ঠিকাদারদের সঙ্গে পুর প্রতিনিধি এবং আধিকারিকদের একাংশের যোজসাজশে বহু বেআইনি আবাসন গড়ে উঠেছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা,কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, হুগলির জেলাশাসক, চন্দননগরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সবুজের অভিযান’-এও অভিযোগের প্রতিলিপি পাঠানতিনি। সেই সূত্রে ‘সবুজেরঅভিযানের’ কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বিষয়টি জেলাশাসকের কাছে তুলে ধরে তদন্তের আর্জি জানান। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর এবং রাজ্য নগরোন্নয়ন সংস্থাতেও (সুডা) বিষয়টি জানান বিশ্বজিৎ।
প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই চিঠির প্রেক্ষিতে বিষয়টি অনুসন্ধান করে শীঘ্র রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য গত ১৭ ফেব্রুয়ারি জেলাশাসক দীপাপ্রিয়া পি নির্দেশ দেন জেলার পুর উন্নয়ন আধিকারিককে। কাল, শুনানিতে জেলার সব পুর-এলাকার আবাসন নিয়ে আলোচনায় চার মহকুমা প্রশাসনের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটদের ডাকা হয়েছে।
এ নিয়ে জেলাশাসকের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। বিভিন্ন পুরসভার কর্তারা জানান, চিঠি বা শুনানির কথা তাঁদের জানা নেই। তবে, জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘চিঠির বিষয়টি জানি না। তবে, এখন তো নির্মাণের প্ল্যান দেওয়া হচ্ছে। চিঠিতে তার আগের পর্বের কথা বলা হয়েছে কি না, বলতে পারব না। যাই হোক, শুনানি হলে প্রকৃত তথ্য উঠে আসবে। সেই মোতাবেক কোনও সিদ্ধান্ত হলে, তা কার্যকর করা হবে।’’
ওই শুনানিতে বিশ্বজিৎকেও ডাকা হয়েছে। তবে, উত্তরবঙ্গে থাকায় তিনি শুনানিতে উপস্থিত পারবেন না। কোনও প্রতিনিধিকে পাঠানোর চেষ্টা করবেন জানিয়ে বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘‘হুগলিতে নির্মাণ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ নতুন নয়। প্রশাসনের উচিত পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে অনিয়ম ধরা পড়লে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া।’’
চিঠিতে অভিযোগকারী জানিয়েছে, ওই সাত শহরে ঠিকাদাররা স্থানীয় দুষ্কৃতীদের সাহায্যে, শাসক দলের নেতাদের একাংশের মদতে নিয়মবিধিভেঙে নির্মাণ করেছেন। পুরসভা ছাড়পত্র দিয়েছে। পুর প্রতিনিধিদের একাংশ এবং কিছু উচ্চপদস্থ আধিকারিক সরকারি নির্দেশ অগ্রাহ্য করেছেন। বিভিন্ন পুরসভার জনপ্রতিনিধিদের কয়েক জনের নামও রয়েছে চিঠিতে। নিয়ম ভেঙে আবাসন তৈরি করেছেন, এমন অনেক ঠিকাদারের নাম করেও চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে।
বিভিন্ন পুরসভার জন প্রতিনিধিদের একাংশের বক্তব্য, বর্তমানে আবাসন তৈরির প্ল্যান দেওয়ার বিষয়টি পুরোটাই হয় অনলাইনে। হাতে হাতে ইচ্ছেমতো করার কোনও সুযোগ নেই। ফলে, অনিয়মের প্রশ্ন নেই। তবে, অনলাইন ব্যবস্থা চালু হওয়ার আগে এইপ্রশ্ন থাকতে পারে। একাধিক পুরপ্রধানের দাবি, ওই চিঠির ব্যাপারে তাঁদের কিছু জানা নেই। ফলে, মন্তব্য করা সম্ভব নয়।