Bomb Blast Case

বিস্ফোরণের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা পুলিশের, প্রশ্ন নজরে

এলাকাবাসীর অভিযোগ, মঙ্গলবার রথতলায় শেখ সামসুরের ছিটেবেড়ার দেওয়াল ও টালির ছাউনির ঘরে বোমা বাঁধা হচ্ছিল। বিকেলেয প্রবল শব্দে বিস্ফোরণে। ঘরটি ভেঙে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:২৭
Share:

বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

বোমা বিস্ফোরণে উলুবেড়িয়ার তপনা পঞ্চায়েতের ফতেপুর রথতলায় দুই নাবালক-সহ ৭ জন জখম হওয়ার ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ঘটনার জেরে এলাকাবাসী আতঙ্কিত। তাঁদের অভিযোগ, দিনের পর দিন ওই জায়গায় বোমা বাঁধা হলেও পুলিশ চোখ বুজে ছিল। বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণের জেরে নড়েচড়ে বসতে হয়েছে। এ ব্যাপারে বিরোধীদের আঙুল তৃণমূলের দিকেও। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি।

Advertisement

এলাকাবাসীর অভিযোগ, মঙ্গলবার রথতলায় শেখ সামসুরের ছিটেবেড়ার দেওয়াল ও টালির ছাউনির ঘরে বোমা বাঁধা হচ্ছিল। বিকেলেয প্রবল শব্দে বিস্ফোরণে। ঘরটি ভেঙে যায়। সামসুর, শেখ হালিম, শেখ ইনা, রাজা খান ও রাজা কাজি ঝলসে যায়। সকলেই ওই ঘরে বোমা বাঁধার কাজে যুক্ত ছিল বলে অভিযোগ। ঘরের সামনে খেলছিল সামসুরের কিশোর ছেলে আরিফ ও ভাইপো হাসান। তারাও জখম হয়। পাশের একটি বাড়িরও ক্ষতি হয়। সামসুর দর্জির কাজ করেন। তবে, দীর্ঘদিন ধরে তার বাড়িতে বোমা বাঁধা হত বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে, খুনের চেষ্টা ও বেআইনি জিনিস মজুতের অভিযোগে সামসুর-সহ জখম পাঁচ জনের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে তদন্ত চলছে। হালিম কলকাতায় এবং বাকিরা উলুবেড়িয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের উপরে পুলিশ নজর রাখছে। সু্স্থ হলেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ঘটনাস্থল ঘিরে রেখে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শীঘ্রই ফরেন্সিক দল যাবে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, একে বৃষ্টি হচ্ছে। বেশি দেরি হলে ঘটনাস্থল থেকে নমুনা হারিয়ে যাবে। বুধবারেও ঘটনাস্থলে বারুদের গন্ধ নাকে এসেছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের দাবি, জরিশিল্পী হালিমের বাড়ি আদতে উলুবেড়িয়ার মদাই গ্রামে। কয়েক বছর আগে সেখানে একটি গোলমালের ঘটনায় জড়িয়ে সে পূর্ব বাউড়িয়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকতে শুরু করে। ফতেপুর তার পাশেই। বুধবার হালিমের স্ত্রী হাসিদা বেগম বলেন, ‘‘মঙ্গলবার সকাল ১১টা নাগাদ একটা ফোন পেয়ে স্বামী বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। বিকেলে বিস্ফোরণের খবর পাই।’’ সামসুরের বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি।

পড়শি মাইনা বেগমের অভিজ্ঞতা, ‘‘বিকট শব্দে কানে কিছু শুনতে পাচ্ছিলাম না। চারদিক ধোঁয়া হয়ে গিয়েছিল। বিস্ফোরণের তীব্রতায় ঘরের জানলা ভেঙে পড়ে। আতঙ্কে দিন কাটছে।’’ হাওড়া জেলা সিপিএম নেত্রী অপর্ণা পুরকাইতের অভিযোগ, ‘‘বোমা যারা বাঁধছিল, সবাই তৃণমূলের দুষ্কৃতী। ভোটের সময় বোমাবাজি করে ভোট করতে দেয় না। নানা জায়গায় বোমা সরবরাহ করে। পুলিশ সব জানে।’’ এলাকাবাসীর অভিযোগ, অভিযুক্তেরা এলাকায় দাদাগিরি করে। পুলিশ ব্যবস্থা নেয় না। পুলিশের দাবি, এমন কোনও অভিযোগ আগে মেলেনি।

সামসুরদের সঙ্গে সংস্রবের অভিযোগ উড়িয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা মধু বাগের দাবি, ‘‘সিপিএম মিথ্যা অভিযোগ করছে। ওরা কেউ তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত নয়। বাম আমলে তপনায় যে হারে গোলমাল হত,এখন হয় না। তাই তৃণমূলের নামে মিথ্যা অভিযোগ করে বিরোধীরা বাজার গরম করতে চাইছে।’’ উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক তথা মন্ত্রী পুলক রায় বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই, খোঁজ নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement