(বাঁ দিকে) অভিযুক্ত মুঙ্গেশ যাদব। (ডান দিকে) রিভু বিশ্বাস। —নিজস্ব চিত্র।
বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটায়। পিন্টু ও রিভু বিশ্বাস, স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে কাজ করতেন মুম্বইয়ের হোটেলে। সেই হোটেলেই রাঁধুনি ছিলেন মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা মুঙ্গেশ যাদব। তাঁর দাবি, রিভুর সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। বিয়ে করবেন বলে কথা দিয়েছিলেন দুই সন্তানের মা রিভু। ওই মহিলাকে তিনি প্রায় ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু, হঠাৎ বিয়েতে ‘না’ বলে দেন রিভু। আর সেই রাগেই তাঁকে হাওড়া স্টেশনের ভিতরে ছুরি দিয়ে আঘাত করেছেন তিনি। বুধবার হাওড়া স্টেশনে খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে এমনই তথ্য পেল পুলিশ। মৃতার স্বামী পিন্টুর অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন মুঙ্গেশ।
বুধবার সকালে ২৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের পার্সেল ডিপার্টমেন্টের পাশে পিন্টু, রিভু এবং মুঙ্গেশ চা খাচ্ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন পিন্টু ও রিভুর নাবালক সন্তানেরা। হঠাৎ পিন্টুকে ওষুধ কিনতে পাঠান মুঙ্গেশ। অভিযোগ, মাথার যন্ত্রণার ওষুধ আনতে দেওয়ার অছিলায় পিন্টুকে ওষুধের দোকানে পাঠিয়ে তাঁর স্ত্রীর পেটে ছুরি চালিয়ে দেন মুঙ্গেশ। অন্য যাত্রীরা চমকে ওঠেন। চিৎকার-চেঁচামেচিতে ছুটে আসে আরপিএফ। কিন্তু মুঙ্গেশ তাঁদের প্রত্যেককে রক্তমাখা ছুরি হাতে শাসাচ্ছিলেন। শেষমেশ অনেক চেষ্টায় তাঁকে বাগে আনেন আরপিএফ কর্মীরা। তুলে দেওয়া হয় গোলাবাড়ি থানার পুলিশের হাতে। পাশপাশি, জখম রিভুকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও চিকিৎসায় সাড়া দেননি তিনি। মৃত্যু হয় তাঁর।
মুঙ্গেশকে জিজ্ঞাসবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, পিন্টু এবং তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় মুম্বইয়ের এক হোটেলে। রিভুর প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন বছর পঞ্চাশের রাঁধুনি মুঙ্গেশ। তাঁর দাবি, রিভু তাঁকে বিয়েও করবেন বলেছিলেন। তাই অনেক টাকা নিয়েছিলেন তাঁর থেকে। মহারাষ্ট্র থেকে উত্তর ২৪ পরগনায় রিভুর বাড়িতেও এসেছিলেন। কিন্তু বিয়ে করতে হঠাৎ বেঁকে বসেন রিভু। তাঁকে ট্রেন ধরিয়ে দিতে সস্ত্রীক পিন্টু এসেছিলেন হাওড়া স্টেশনে। সেখানে রাগের চোটে রিভুর পেটে ছুরি চালিয়ে দেন বলে স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত।
ইতিমধ্যে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মৃতার স্বামীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে খবর।