বন্যার জল নামতেই উদ্ধার হচ্ছে বিভিন্ন সাপ। —নিজস্ব চিত্র।
বানের জল খানিক নেমেছে। একটু একটু করে স্বাভাবিক হচ্ছে বন্যাবিধ্বস্ত হুগলি জেলার বিস্তীর্ণ অংশ। কিন্তু তার মধ্যেই নতুন আতঙ্কে মানুষজন! গত এক সপ্তাহে হুগলিতে সাপের ছোবল খেয়েছেন ৩৯ জন। এর মধ্যে শুধু বলাগড়েই রয়েছেন সাত জন মানুষ। অন্য দিকে, পোলবায় ১৬টি গোখরো সাপের ডিম উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
বন্যার জলে প্লাবিত হয়েছে হুগলির সাত-আটটি ব্লক। আরামবাগের খানাকুল, পুরশুড়ার গোঘাটের পাশাপাশি তারকেশ্বর জাঙ্গিপাড়া এবং বলাগড়ের বেশ কয়েকটি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত। বানের জলের সঙ্গে এখন মানুষের কাছে ‘জ্যান্ত আতঙ্ক’ হয়ে দাঁড়িয়েছে সাপ। বাড়ির মধ্যে জল ঢুকেছে। আর তাতে খেলে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে সাপেদের। অনেকে সাপের কামড়ও খেয়েছেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই জানা গেল গত এক সপ্তাহে ৩৯ জনকে সাপে কামড়েছে। সাপের কামড়ে আহত বলাগড়ের কয়েক জন জিরাট, আহমেদপুর হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছেন। প্রত্যেকে সুস্থ হয়ে গিয়েছেন বলে খবর। কিন্তু সাপের উপদ্রবে চিন্তিত এবং ভীত সাধারণ মানুষ। বিশেষত, বাড়ির খুদে সদস্যদের নিয়ে বেশি চিন্তায় অভিভাবকেরা। বলাগড় ব্লকের বিএমওএইচ জয়দীপ বড়ুয়া বলেন, ‘‘দুর্যোগের সময় সাত জনকে সাপে কামড়ায়। তাঁরা প্রত্যেকেই ভাল আছেন। এখন জল নামতে শুরু করেছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। সব জায়গা ব্লিচিং পাউডার দেওয়া হচ্ছে।’’
পোলবার বিডিও অফিস চত্বরে একটি পরিত্যক্ত ঘরের ছাদ থেকে গোখরো সাপের ১৬টি ডিম উদ্ধার হয়েছে। কাশীনাথ ধাড়া এক কর্মী আগাছা পরিষ্কার করতে গিয়ে ওই ডিমগুলো দেখতে পান। গোখরো সাপের ১৬ টি ডিম দেখতে পান। সেই অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে কাশীনাথ বলেন, ‘‘এত গুলো ডিমের পাশে দেখলাম একটা গোখরো কুণ্ডলী পাকিয়ে বসে আছে। এগোতেই ফোঁস ফোঁস শব্দ করছিল। সর্প উদ্ধারকারী অরিন্দম চক্রবর্তীকে খবর দিয়েছিলাম। তিনি এসে ষোলোটি ডিম উদ্ধার করেছেন।’’ অরিন্দম জানিয়েছেন, বন দফতরকে আবেদন করে ডিমগুলো ফোটানোর ব্যবস্থা করবেন। ডিম ফুটে সাপের জন্ম হলে সেগুলোকে বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হবে।