সেই বৃদ্ধার সঙ্গে পুলিশ কর্মী সুকুমার উপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।
মাস দুয়েক আগে ব্যান্ডেল স্টেশনে রেখে গিয়েছিলেন ছেলে। অবশেষে দুর্গাপুরের বাড়িতে ফিরলেন সেই বৃদ্ধা। নেপথ্যে পুলিশকর্মী সুকুমার উপাধ্যায়। যাঁকে ‘বছরের বেস্ট’ পুরস্কার দিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। নভেম্বর ২০২১-এর ‘অ-সাধারণ’-এর মুকুটও তিনিই পেয়েছিলেন।
এর আগে বহু অসহায়, ভবঘুরেকে ঘরে ফিরিয়েছেন চন্দননগর পুলিশের কনস্টেবল সুকুমার। এই বৃদ্ধার খবর তাঁকেই প্রথম দিয়েছিলেন নবদ্বীপের এক নিত্যযাত্রী। তিনি জানান, ব্যান্ডেল স্টেশনের সাত নম্বর প্লাটফর্মে এক বৃদ্ধাকে পড়ে থাকতে দেখেছেন। দেখে মনে হয় তাঁর সাহায্যের প্রয়োজন।
ব্যান্ডেল স্টেশন পৌঁছে বৃদ্ধাকে খুঁজে তাঁর নাম, ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন সুকুমার। বৃদ্ধা জানান, তাঁর নাম রিনা পাল। বাড়ি দুর্গাপুরের ফরিদপুরে। দিন পাঁচেক বৃদ্ধাকে খাবার দেন সুকুমার। তাঁর সঙ্গে গল্প করে ছেলে কোথায় থাকেন, জানার চেষ্টা করেন। ছেলের ঠিকানা বলতে না পারলেও বৃদ্ধা জানান, তাঁর এক নাতনি রয়েছে। নাম মিষ্টু। বেনাচিতির একটি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। সুকুমার দুর্গাপুরে তাঁর সহকর্মীদের কাছে বৃদ্ধার ছবি পাঠিয়ে খোঁজখবর নিতে বলেন। বেনাচিতিতে ১২টি স্কুলে খোঁজখবর নেওয়ার পর বৃদ্ধার নাতনির খোঁজ মেলে। সেই সূত্রে বৃদ্ধার ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
অন্য দিকে, হুগলি জেলা প্রশাসন বৃদ্ধার বিষয়টি জানতে পারে। তাঁকে চিকিৎসার জন্য চুঁচুড়া ইমামবড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হুগলি জেলা সমাজ কল্যাণ দফতরের তরফেও বৃদ্ধার বাড়ি এবং তাঁর ছেলের খোঁজ চালানো হয়। বৃহস্পতিবার সুকুমার চুঁচুড়া আদালতে কর্তব্যরত ছিলেন। সেখানেই সমাজ কল্যাণ দফতর। সুকুমার সেখানে গিয়ে জানান, বৃদ্ধার বাড়ির খোঁজ তিনি পেয়েছেন। এর পর অতিরিক্ত জেলাশাসক(উন্নয়ন) অমিতেন্দু পাল বৃদ্ধাকে বাড়ি ফেরানোর নির্দেশ দেন। পুলিশকর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে সঙ্গে যেতে বলেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে বৃদ্ধাকে নিয়ে তাঁর বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন সুকুমারেরা।