বাবুল সুপ্রিয়কে খোঁচা নির্মল মাজির। — ফাইল চিত্র
দুপুরে তৃণমূল শিবিরে যোগ দিয়েছেন বিজেপি-র ‘রাজনীতি ছেড়ে দেওয়া’ আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। বেলা গড়াতেই তৃণমূলের চিকিৎসক-বিধায়ক নির্মল মাজির ‘খোঁচা’ ধেয়ে এল। পাশাপাশি,বাবুল এ বার জনসেবা এবং গান দুই-ই ‘দিদি’র আঁচলে থেকে করতে পারবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার উত্তরপাড়ায় একটি কর্মসূচিতে যোগ দেন নির্মল। তত ক্ষণে অবশ্য তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে জোড়াফুল শিবিরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আসানসোলের বিজেপি সাংসদের যোগদানের খবর চাউর হয়ে গিয়েছে। তা নিয়েই নির্মলকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। উত্তরে চিকিৎসক-বিধায়ক কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘‘বাবুলের জ্ঞান ফিরেছে। ভেন্টিলেটরে ছিলেন। দমবন্ধ, অবরুদ্ধ অবস্থা। স্যালাইন চলছিল। অক্সিজেন চলছিল। ওর সোডিয়াম, পটাশিয়াম কম ছিল। তাই বিজেপি-তে থেকে একেবারে ল্যাটা মাছের মতো কাতরাচ্ছিল। চিংড়ি মাছের মতো লাফাচ্ছিল।’’ এর পরেই নির্মলের সংযোজন, ‘‘এ বার নতুন অক্সিজেন পেয়ে, গণতান্ত্রিক পরিবেশে দিদির আঁচলে ভাল ভাবে জনসেবার কাজ করতে পারবে। গানটাও করতে পারবে।’’
নির্মলের মতো বাবুলকে বিঁধেছেন উত্তরপাড়ার বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকও। তাঁর সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, ‘‘ওঁর মতির ঠিক হয়েছে সব কিছু হারানোর পর। উনি বুঝতে পেরেছেন যে অগতির গতি তৃণমূল কংগ্রেস। শুদ্ধিকরণ মানুষের দরকার।’’
বাবুলের দলবদল নিয়ে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা ভাল। বাবুলকে স্বাগত। ও এমনিতে খুব ভাল ছেলে। সপ্তাহতিনেক আগে বাবুল আমাকে ফোন করে বলেছিল, ওর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ জওয়ানদের তুলে নেওয়া হয়েছে। দিদিকে বলে রাজ্য সরকার থেকে যদি নিরাপত্তা দেওয়া যায়। আমি সঙ্গে সঙ্গে দিদিকে ফোন করি। দিদি বোধ হয় সেই সময় পানাগড়ে ছিলেন। আমি দিদিকে বলি। ১০-১৫ মিনিটে ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। একটা কথা স্পষ্ট, বিভিন্ন জায়গা থেকে বিজেপি-র লোকজন তৃণমূলে যোগ দিচ্ছে। এটা স্পষ্ট, আগামী দিনে লড়াইয়ের মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবাই মিলে একসঙ্গে লড়লে নরেন্দ্র মোদীকে চলে যেতে হবে।’’
তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত বলেন, ‘‘বাবুল সুপ্রিয় ভাল ছেলে। তিনি সাংসদ। উনি দলে আসায় আমরা খুব খুশি। পিছনের কথা ভুলে যেতে হবে। রাজনীতিতে অনেক কথা হয়। সেগুলো ধরলে হয় না। ওঁকে দলে স্বাগত। উনি ভাল কাজ করবেন, উন্নয়ন করবেন, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গী হবেন। রাজনীতিতে প্রথম এবং শেষ বলে কিছু নেই।’’
বাবুল তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় উচ্ছ্বাসের ছবি দেখা গিয়েছে তাঁর নিজের কেন্দ্র আসানসোলে। আসানসোলের রাহা লেনে তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে দলীয় কর্মীরা আবির খেলেন। মিষ্টিমুখও করেন তাঁরা