পরিবেশ ধ্বংস করলে দুষ্কৃতীদের জেলে ভরার বার্তা বিধায়কের
Pond Filling

Pond Fillings: চুঁচুড়ায় পুকুর ভরাট রুখলেন এলাকার বাসিন্দারা

ওই এলাকায় পাশাপাশি দু’টি জলাশয় রয়েছে। তার চারধারে বেশ কিছু বড়-ছোট গাছও ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২১ ০৯:৪৪
Share:

পুকুর ভরাট সরেজমিন খতিয়ে দেখতে হাজির বিধায়ক। রবিবার চুঁচুড়ায়। ছবি: তাপস ঘোষ

মাটি ফেলে চুঁচুড়ার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মহেন্দ্র মিত্র রোড এলাকায় একটি পুকুর ভরাট শুরু হয়েছিল। রুখে দাঁড়ালেন এলাকাবাসী। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে জলাশয় ভরাটকারীদের বার্তা দিলেন বিধায়ক অসিত মজুমদার। পুকুর পুরোপুরি ভরাট না হলেও ওই চত্বরের বেশ কিছু গাছ কাটা পড়েছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন, জলাশয় বুজিয়ে প্লট করে বিক্রির চক্রান্ত চলছে। নেপথ্যে রয়েছেন ‘বাহুবলী’রা।

Advertisement

ওই এলাকায় পাশাপাশি দু’টি জলাশয় রয়েছে। তার চারধারে বেশ কিছু বড়-ছোট গাছও ছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ওই কারবারিদের নজর সেখানে পড়ে। সম্প্রতি গাছ কেটে নেওয়া হয়। শনিবার একটি পুকুরে মাটি ফেলা শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় কানাঘুষো শুরু হয়। তবে, সমাজবিরোধীরা ওই বেআইনি কাজের পিছনে থাকতে পারে, এই ভয়ে স্থানীয় লোকজন সরাসরি প্রতিরোধের সাহস পাননি। শনিবার বিষয়টি স্থানীয় বিধায়ক অসিত মজুমদারের কানে পৌঁছয়। বিধায়ক জানান, সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনার কথা তিনি পুরপ্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় এবং বিএলএলআরও-কে (চুঁচুড়া-মগরা) জানান। পুরসভা এবং ভূমি দফতরের ওই দুই কর্তা ওই দিনই পরিস্থিতি দেখে আসেন।

রবিবার সকালে বিধায়ক ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, মাটি, গাছের গুঁড়ি, ডালপালা— সবই জলাশয়ে ফেলা হয়েছে। তাঁকে দেখে স্থানীয় লোকজন চলে আসেন। এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। পুকুর ভরাট এবং গাছ কাটা নিয়ে বিধায়কের কাছে অভিযোগ জানাতে থাকেন এলাকাবাসী। ওই জলাশয় কচুরিপানায় ভর্তি হয়ে রয়েছে। কেন পুকুর সংস্কার করা হয় না, সেই প্রশ্নও ওঠে।

Advertisement

এলাকাবাসীর দাবি, পুকুর পরিষ্কার করে মাছ চাষ করা হোক। সামনের ফাঁকা জায়গা এমনিই পড়ে রয়েছে। সেখানে ছোটদের খেলার ব্যবস্থা করা হোক। তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, প্রশাসন হস্তক্ষেপ না করলে শুধু পরিবেশই ধ্বংস হবে না, সমাজবিরোধীদের আনাগোনা আরও বাড়বে।

এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ভিতরে ভিতরে অনেক দিন ধরেই পুকুর ভরাটের পরিকল্পনা চলছিল। দুষ্কৃতী, বহিরাগতদের আনাগোনা দেখছিলাম। বেআইনি কাজ বন্ধ না হলে এলাকা দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠবে। এ জিনিস বন্ধ হোক।’’ এলাকাবাসীকে বিধায়ক আশ্বাস দেন, পুকুর ভরাট করতে দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দফতর উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে। বিধায়ক বলেন, ‘‘খুন-ডাকাতি যেমন অপরাধ, পরিবেশ ধ্বংস করাও তাই। এমন বেআইনি কাজে যুক্ত কাউকেই রেয়াত করা হবে না। সমাজবিরোধীদের জেলে ভরার ব্যবস্থা করা হবে।’’

চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘থানায় অভিযোগ দায়ের হলে তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’

চুঁচুড়ায় পুকুর ভরাটের অভিযোগ নতুন নয়। এ ক্ষেত্রে পুলিশ-প্রশাসনের চোখ বুজে থাকা এবং মদতের অভিযোগও ওঠে। তবে, বিধায়কের বক্তব্য, অনেক ক্ষেত্রেই পুকুরের মালিক পুকুর বেচে দেন সমাজবিরোধীদের কাছে। সমাজবিরোধী তথা দুষ্টচক্র পুকুর বুজিয়ে প্লট করে বিক্রি করে বা নির্মাণ করে টাকা লোটে। ফলে, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মালিকরাও সমান দায়ী বলে তিনি মনে করেন। তাঁর কথায়, ‘‘এমনটা দেখলে পুলিশ-প্রশাসনকে বলব, তাঁদেরও গ্রেফতার করতে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement