শ্রীরামপুরের বাঙ্গিহাটির দিল্লি রোড মোড়ে দুর্ঘটনার পর অবরোধ চলছে।
হুগলিতে একই দিনে পৃথক তিন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল ভিলেজ পুলিশ-সহ তিন জনের। জখম হয়েছেন তিন জন।
সোমবার সকালে শ্রীরামপুরের বাঙ্গিহাটির দিল্লি রোড মোড়ে বেপরোয়া ট্রাকের ধাক্কার বলি হলেন দুই ব্যক্তি। মৃতদের নাম শঙ্কর মালিক (৪২) ও জয়ন্ত মাঝি (৪৫)। দু’জনেরই বাড়ি বাঙ্গিহাটির পূর্বপাড়ার বারোমন্দির তলায়। দুর্ঘটনার পর নজরদারিতে পুলিশি গাফিলতির অভিযোগ তুলে দিল্লি রোড অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তার জেরে যানজটে নাকাল হন যাত্রীরা। প্রায় তিন ঘণ্টা পর প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে। ট্রাক-সহ চালককে আটক করেছে পুলিশ।
চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘গাড়িটির গতি বেশি ছিল। তাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এমন দুর্ঘটনা হয়েছে। আর চালকও মত্ত ছিল বলে অনুমান। তাকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। মৃতদের পরিজনদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।’’
এ দিন মোটরবাইক চালিয়ে বছর তেরোর ছেলেকে বিদ্যালয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন জয়ন্ত। সেই সময় ট্রাকটি ডানকুনির দিক থেকে বর্ধমানের দিকে যাচ্ছিল। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকটি ধাক্কা মারে জয়ন্তর বাইকে। ছেলেকে নিয়ে জয়ন্ত ছিটকে পড়েন রাস্তায়। তারপর ট্রাকটি ধাক্কা মারে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়ি, দু’টি বাইককে। তারপর ট্রাকটি সাইকেল নিয়ে মাছ কিনতে ব্যস্ত থাকা শঙ্করকে পিষে দেয়।
পুলিশ এসে ট্রাকের নিচ থেকে শঙ্করের মৃতদেহ উদ্ধার করে। আর স্থানীয়রা জয়ন্ত ও তাঁর ছেলেকে গুরুতর জখম অবস্থায় শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই জয়ন্তকে মৃত বলে জানান চিকিৎসকরা। পরে তার ছেলেকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
দুর্ঘটনার পর ট্রাকচালক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্র্যাফিক সার্জেন্টকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী। তাঁদের ক্ষোভ, ওই জায়গায় ট্রাফিক পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার থাকলেও তাঁরা ঠিক করে কাজ করেন না। এক বাসিন্দার ক্ষোভ, ‘‘ওঁরা বাস স্ট্যান্ডে বসে আড্ডা দেন। কাজের সময় মোবাইল ঘাঁটতে ব্যস্ত থাকেন। ওঁরা ঠিক করে কাজ করলে এমন দুর্ঘটনা হত না।’’ ওই মোড়ে সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু ও সব ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েনের দাবি ওঠে।
এ দিন বিকেল গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হল মোটরবাইক আরোহী এক ভিলেজ পুলিশকর্মীর। খন্যানের বোসো এলাকার জিটি রোডের এই দুর্ঘটনায় মৃতের নাম শেখ গিয়াস আলি (৩৪)। তিনি খন্যানের পাইকারা গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয়রা তাঁকে পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত বলে জানান। পুলিশ গিয়ে গাড়ি ও বাইকটি আটক করে। তবে গাড়িচালক পলাতক।
সোমবার দুপুরে নিচ ডানকুনিতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের কলকাতামুখী রাস্তা থেকে বর্ধমানমুখী রাস্তায় যেতে গিয়ে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে পরপর তিনটি গাড়িকে। জখম হন চার জন। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তিন জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। দুর্ঘটনার জেরে এ দিন বর্ধমানমুখী রাস্তায় যান চলাচল ব্যাহত হয়।