এই চালের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অভিভাবকদের একাংশ। — নিজস্ব চিত্র।
মিড ডে মিলে শিশুদের দেওয়া খিচুড়ি পোকায় ভরা! সোমবার নিম্নমানের চাল দিয়ে তৈরি খিচুড়ি খেয়ে কয়েক জন পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে দাবি অভিভাবকদের একাংশের। তা নিয়েই হুগলির চণ্ডীতলার বেণীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে উত্তেজনা। প্রধানশিক্ষিকার সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়লেন অভিভাবকেরা।
চণ্ডীতলার বেণীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতি দিনই প্রায় ৪০ জন শিশুর জন্য মিড ডে মিল রান্না করা হয়। মঙ্গলবার সেই রান্না করা খাবার হাতে নিয়ে স্কুলে ফিরে আসেন কয়েক জন অভিভাবক। তাঁদের দাবি, খিচুড়িতে কিলবিল করছে পোকা। তা নিয়ে স্কুলের প্রধানশিক্ষিকার সঙ্গে বচসা শুরু হয়ে যায় অভিভাবকদের একাংশের। তাঁদের অভিযোগ, স্কুল থেকে দেওয়া খিচুড়ি খেয়ে অনেক শিশুই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এক শিশু পড়ুয়ার দিদি বলেন, ‘‘আজ সকালে খিচুড়ি খাওয়াতে বসে দেখি উপরে পোকা ভাসছে। ভাল করে ঘেঁটে দেখি ভিতরেও পোকায় ভরে রয়েছে। দিদিমণিকে সেটা দেখালাম। তিনি বলছেন, আমার কিছু করার নেই। এই খিচুড়ি আমার বোনকে খাওয়াব কী করে?’’ অন্য এক শিশুর বাবা সমীর সামন্ত বলেন, ‘‘ভোর চারটের সময় সংক্রমণ হয়ে বমি শুরু হয় বাচ্চার। ২৫ থেকে ৩০ বার বমি করেছে। ভোর চারটের সময় চণ্ডীতলা হাসপাতালে নিয়ে যাই। শেষ পর্যন্ত ইনজেকশন দিয়ে বাচ্চার বমি থামাতে হয়েছে। অনেক দিন ধরেই এ রকম চলছে।’’
খিচুড়িতে পোকা থাকার বিষয়টি মেনে নিয়েছেন ওই স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা। তিনি বলছেন, ‘‘বাচ্চাদের চালে পোকা কোথা থেকে এল আমি বুঝতে পারছি না। রোজ ধুয়ে দেওয়া হয়। আমার বিশেষ কাজ ছিল তাই আজ (মঙ্গলবার) দেখে দিতে পারিনি। আমি সহায়কদের অনেক বার বলেছি, চাল, ডাল ভাল করে ধুয়ে দিতে। আমার বাচ্চা হলে কখনওই পোকা থাকা খিচুড়ি খেতে দিতাম না। আমি যত দিন একা সামলেছি কোনও দিন পোকা আছে এমন রিপোর্ট আসেনি। আজকে আমার কপাল খারাপ যে, এ রকম রিপোর্ট এসেছে। আমি সত্যিই দুঃখিত।’’ অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, রান্নার তেল চুরি হয়। যদিও এই অভিযোগ মানতে চাননি প্রধান শিক্ষিকা।
অভিভাবক তথা স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মিড ডে মিলের খাবার নিয়ে সমস্যার কথা আগে বার বার স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাঁদের প্রশ্ন, স্কুলের দেওয়া খাবার খেয়ে যদি শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকে তা হলে মিড ডে মিল দেওয়ার স্বার্থকতা কি?