— প্রতীকী ছবি।
যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল হুগলিতে। গৌরহাটি ইএসআই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, আত্মঘাতী হয়েছেন রোগী। এই প্রেক্ষিতেই প্রশ্ন উঠছে, হাসপাতালে ভর্তি এক জন রোগী কী করে আত্মহত্যা করতে পারেন! নজরদারির এত বড় গাফিলতি হয় কী করে? ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করেছে মৃতের পরিবার।
ভদ্রেশ্বরের বাবুবাজারের বাসিন্দা ১৯ বছরের রবীন সিংহ। পেটে সংক্রমণ নিয়ে গত ১২ নভেম্বর তিনি ভর্তি হয়েছিলেন গৌরহাটির ইএসআই হাসপাতালে। সেখান থেকে তাঁকে বজবজের একটি হাসপাতালে রেফার করা হয়। ১৯ নভেম্বর বজবজের ওই হাসপাতালেই রবীনের অস্ত্রোপচার হয়। তার পর নজরদারির জন্য রবীনকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় গৌরহাটির ইএসআই হাসপাতালে। সোমবার সন্ধ্যার পর রবীনকে আবার গৌরহাটির হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ রবীনের পরিবারকে ফোন করে জানানো হয়, রোগীর অবস্থা খারাপ। দ্রুত তাঁদের হাসপাতালে ডেকে পাঠানো হয়। পরিবার হাসপাতালে এসে জানতে পারে, আত্মহত্যা করেছেন রবীন।
অস্ত্রোপচারের পর গৌরহাটির হাসপাতালের এইচডিইউতে ভর্তি করানো হয়েছিল রবীনকে। হাসপাতালে কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মী এবং নার্সদের দাবি, সেখানেই বিছানা ঘেরার পর্দা টাঙানোর অ্যালুমিনিয়ামের রড থেকে ঝুলে পড়েন রবীন। অথচ রোগীর ২৪ ঘণ্টা দেখভালের জন্য এক জন আয়া রাখা ছিল বলে দাবি পরিবারের। তাঁর চোখ এড়িয়ে কী করে এই ঘটনা ঘটল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। গাফিলতির অভিযোগ করছে রবীনের পরিবার। এইচডিইউ বিভাগে নিরাপত্তার কড়াকড়ি অনেক বেশি। নজরদারিও চলে সর্বক্ষণ। সেখানে এক জন রোগী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন, আর তা কারও নজরে পড়ল না! পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালের কর্মীদের গাফিলতিতেই এই ঘটনা ঘটেছে। দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।
ভদ্রেশ্বর পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল প্রকাশ গোস্বামী ঘটনার খবর পেয়ে ইএসআই হাসপাতালে গিয়ে হাসপাতালের নার্স এবং কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার পুরসভা এলাকার বাবু বাজারের বাসিন্দা ওই যুবক। এইচডিইউ ওয়ার্ডের ভিতরে যে ভাবে মৃত্যু হয়েছে, তাতে গাফিলতি স্পষ্ট।পুলিশকে বলেছি বিষয়টি দেখতে।’’
দেহের ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। হাসপাতালে উত্তেজনা থাকায় চন্দননগর ও ভদ্রেশ্বর থানার পুলিশবাহিনী এবং র্যাফ মোতায়েন করা হয়েছে।