প্রতীকী ছবি।
সরকারি নির্দেশিকা না মেনে এ বার বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিষেধক দেওয়ার অভিযোগ উঠল হাওড়ার কয়েকটি বেসরকারি পরীক্ষাগারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, মানুষের থেকে অনেক বেশি টাকা নিয়ে বাড়িতে গিয়ে প্রতিষেধক দিয়ে আসছেন ওই সমস্ত বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। ইতিমধ্যে এমনই একটি সংস্থাকে চিহ্নিত করে তাদের প্রতিষেধক দেওয়া বন্ধ করতে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি, ওই সংস্থার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করারও চিন্তাভাবনা শুরু করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। ওই ধরনের আরও কয়েকটি সংস্থা জেলা প্রশাসনের নজরে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর ওই সংস্থাগুলির উপরে নজরদারি বাড়িয়েছে।
কয়েক মাস আগেও রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, ক্লাব ও প্রতিষ্ঠানকে অবাধে প্রতিষেধক শিবির করার অনুমতি দিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু কলকাতায় দেবাঞ্জন দেব গ্রেফতার হওয়ার পরে রাজ্য জুড়ে ঢালাও বেসরকারি প্রতিষেধক শিবির করায় লাগাম পরানো হয়। হাওড়াতেও প্রথমে এই ধরনের বেসরকারি শিবির ও দুয়ারে প্রতিষেধক প্রকল্প চালু ছিল। পরে অধিকাংশই বন্ধ করে দেওয়া হয়। এমনকি, যে সমস্ত বেসরকারি পরীক্ষাগার প্রতিষেধক দিচ্ছিল, সেগুলির সংখ্যাও কমিয়ে দেওয়া হয়।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বেসরকারি পরীক্ষাগারগুলি সিরাম ইনস্টিটিউট বা ভারত বায়োটেক থেকে সরাসরি প্রতিষেধক কেনে। সেই প্রতিষেধক জমা হয় বাগবাজারে, স্টেট ড্রাগ স্টোরে। বেসরকারি পরীক্ষাগারগুলি কিছু প্রতিষেধক নেয় সরাসরি স্টেট ড্রাগ স্টোর থেকে। আবার কিছু নেয় জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ড্রাগ স্টোর থেকে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘হাওড়া পুরসভা এলাকায় বর্তমানে ১৪টি বেসরকারি পরীক্ষাগারকে প্রতিষেধক দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি সংস্থাই সরকারি নিয়ম মেনে চলতে বাধ্য।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ আসতে শুরু করেছে যে, ওই সংস্থাগুলি অনেক বেশি টাকার বিনিময়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিষেধক দিচ্ছে। যা পুরোপুরি সরকারি নিয়মের পরিপন্থী। কারণ, রাজ্য সরকার আগেই পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিল, বেসরকারি সংস্থাগুলিকে সব রকম কোভিড-বিধি মেনে নিজেদের পরীক্ষাগারেই প্রতিষেধক দিতে হবে। কিন্তু সেই নিয়মকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেসরকারি সংস্থাগুলি এমন স্বেচ্ছাচারিতা শুরু করায় নড়েচড়ে বসেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিষেধক দেওয়ার খবর পাওয়ার পরেই বেসরকারি পরীক্ষাগারগুলির উপরে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। একটি সংস্থাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই ধরনের সংস্থাগুলি সরকারি নিয়ম না মানলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনুমতিও বাতিল করা হতে পারে।’’