পাড়ায় নির্বিবাদী, ভদ্র বলে পরিচিতি রয়েছে ব্যবসায়ী তথা প্রোমোটার পঙ্কজ সিংহের। —নিজস্ব চিত্র।
গোর্কি সদনের সামনে ব্যবসায়ী তথা প্রোমোটার পঙ্কজ সিংহের উপরে কী কারণে গুলির হামলা হল? পাড়ায় নির্বিবাদী, ভদ্র বলে পরিচিত পঙ্কজের উপরে হামলা কি ব্যবসায়িক শত্রুতার জের? অনেক ভেবেও কূলকিনারা পাচ্ছেন না তাঁর মা শ্রীলক্ষ্মী সিংহ। রবিবার রাতে এই ঘটনায় হতবাক তাঁর আত্মীয়পরিজন থেকে প্রতিবেশীরা। অবাক হয়ে গিয়েছেন পঙ্কজের পড়শি তথা উত্তর হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরীও। গোর্কি সদনের সামনে শ্যুটআউট-কাণ্ডের তদন্তে আসল সত্য প্রকাশ্যে আসুক, চাইছেন গৌতম।
রবিবার মাঝরাতে পঙ্কজের উপর গুলিচালনার পর থেকেই হাওড়ার সালকিয়া এলাকায় তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে চাপা উত্তেজনা রয়েছে। গোলাবাড়ি থানার ৮৯ নম্বর সালকিয়া স্কুল রোডের বঙ্গেশ্বর অ্যাপার্টমেন্টে ফেরার পথে তাঁর উপর দুষ্কৃতীদের হামলা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার রাত সওয়া ১১টা নাগাদ তিন বন্ধুর সঙ্গে গাড়িতে করে কলকাতা থেকে হাওড়ায় নিজের অ্যাপার্টমেন্টে ফিরছিলেন পঙ্কজ। তাঁর বন্ধুরা পুলিশের কাছে দাবি করছেন, পার্ক সার্কাসের দিক থেকে পঙ্কজের গাড়ি রবীন্দ্র সদনমুখী হওয়ার সময় গোর্কি সদনের কাছে পাঁচ-ছ’টি মোটরবাইকে সওয়ার দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। পঙ্কজের গাড়ির সামনে এসে তাঁর রাস্তা আটকায় জনা পনেরো দুষ্কৃতী। কী হয়েছে তা জিজ্ঞাসা করতে গাড়ি থেকে নামতেই পঙ্কজকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় তারা। যদিও গুলি পঙ্কজের কাঁধ ছুঁয়ে বেরিয়ে যাওয়ায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান তিনি। হামলার পর এলাকা থেকে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।
খবর পেয়ে পঙ্কজকে উদ্ধার করে একবালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ। পুলিশের পাশাপাশি ঘটনার তদন্তে নেমেছে লালবাজারের গুন্ডাদমন শাখাও।
পঙ্কজের উপর কেন হামলা হল? কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না তাঁর মা বা প্রতিবেশীরা। দীর্ঘ দিন ধরেই কাপড়ের ব্যবসা সিংহ পরিবারের। সেই সূত্রেই কি শত্রুতা, আর তার জেরে হামলা? জবাব খুঁজে পাচ্ছেন না শ্রীলক্ষ্মী। তাঁর দাবি, “রবিবার রাতে পঙ্কজের উপর হামলার কথা কিছুই জানতাম না। (সোমবার) সকালে ছোটছেলে ফোন করে ঘটনার কথা আমাকে জানায়। যত দূর জানি, পঙ্কজের কোনও ব্যবসায়িক শত্রুতা ছিল না। কারা এই ঘটনার পিছনে, তা কিছুতেই বুঝতে পারছি না।” একই দাবি করেছেন পঙ্কজের এক আত্মীয় রঞ্জিৎ সিংহ। তাঁর কথায়, “কী কারণে এমন হামলা হল কিছুই জানি না। কারও সঙ্গে পঙ্কজের বিবাদ ছিল বলেও জানি না, তাই কাউকে সন্দেহ করার প্রশ্নই নেই।”
পঙ্কজের আবাসনের একটি ফ্ল্যাটে থাকেন উত্তর হাওড়ার বিধায়ক গৌতম। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে পঙ্কজ ও তাঁর পরিবারকে চিনি। ছোটবেলা থেকে ওঁর পরিবারের সঙ্গে সদ্ভাব রয়েছে। এলাকায় নির্বিবাদী বলেই পরিচিত পঙ্কজ। ওঁর পরিবারও অত্যন্ত ভদ্র। ওঁদের ৩০ বছরেরও বেশি কাপড়ের ব্যবসা। এলাকায় যথেষ্ট সুনামও রয়েছে। সামান্য কারণে কারও সঙ্গে পঙ্কজের শত্রুতা হতে পারে বলে মনে হয় না। হঠাৎ তাঁকে কেন গুলি করল দুষ্কৃতীরা, তা অত্যন্ত আশ্চর্যের। তদন্তে আসল সত্য প্রকাশ্যে আসুক, সেটাই চাইব।”