ধস নেমেছে উত্তরাখণ্ডের বহু এলাকায়। —নিজস্ব চিত্র।
বিয়ের পর আমাদের প্রথম বার কোথাও বেড়াতে যাওয়া। স্বাভাবিক ভাবেই তা নিয়ে আমাদের অনেক পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সব মাঠে মারা গেল।
গত ১৫ অক্টোবর আমরা লালকোঁয়া এক্সপ্রেস ধরে হাওড়া থেকে উত্তরাখণ্ড রওনা দিয়েছিলাম। ১৬ অক্টোবর নৈনিতাল পৌঁছই। সেখানে দু’দিন ছিলাম। ১৮ অক্টোবর আমাদের কৌশানী যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই পথে যেতে গিয়েই যত বিপত্তি। রাস্তায় আচমকা হড়পা বান নামে। এখানকার পরিস্থিতি খুব খারাপ। আমাদের মঙ্গলবার নৈনিতাল থেকে বেরিয়ে কৌশানী হয়ে মুন্সিয়ারি যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার বদলে আমরা এখন নৈনিতাল থেকে ১৪ কিলোমিটার আগে ভওয়ালি নামে একটা জায়গায় আটকে পড়েছি। দু’টি পাহাড়ের মাঝে এটা একটা চটি। কাচিধামে হড়পা বান হয়েছে। তার জেরে ধস নেমেছে। আবার নীচে ভওয়ালিচক বাজারে যাওয়ার রাস্তাতেও ধস। আমরা মাঝখানে আটকে গিয়েছি। রাস্তার অবস্থা তথৈবচ। কোনও দিকে যাওয়ার উপায় নেই।
আজ দুপুর পর্যন্ত এখানে টানা বৃষ্টি হয়েছে। তার পর থেকে বৃষ্টি কিছুটা ধরেছে। স্থানীয় ভাষায় বলা হয়, ‘নালা খুল গয়া।’ এখানে সেটাই হয়েছে। ঝরনার মতো জল-কাদা নেমে এসেছে। সেটা বন্ধ না হলে সমস্যা আরও গভীর হবে। এখানকার রাস্তায় পাঁচশোর বেশি গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। খাবারের ট্রাক যেতে পারছে না। খাবারের সঙ্কট দেখা দিতে পারে। এমনকি অ্যাম্বুল্যান্সও আটকে রয়েছে। এখন রাস্তার যা পরিস্থিতি দেখছি তাতে আরও অন্তত দু’দিন লাগবে ঠিকঠাক হতে।
তবে এখানকার সরকার খুব চেষ্টা করছে। পুলিশ টহল দিচ্ছে। আজ সকালেই একটা বাস খাদে পড়ে গিয়েছিল। পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী দ্রুত তাদের উদ্ধার করেছে। তবু তার মাঝেও মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। কাচিধামে একটা হোটেলে ধস নামে আচমকা। শুনলাম, তাতে একই পরিবারের তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। মুন্সিয়ারিতে হাজার দু’য়েক পর্যটক আটকে আছেন।