বকেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ হুগলির বিদ্যুৎ দফতরের ঠিকাদারদের। — নিজস্ব চিত্র।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকার জন্য বিভিন্ন স্কুলে বৈদ্যুতিক পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ করেছিলেন বিদ্যুৎ দফতরের ঠিকাদাররা। ভোটের দিন বুথে আলো, পাখা থেকে গণনাকেন্দ্রে বিদ্যুতের কাজ করেছিলেন তাঁরা। প্রায় সাত কোটি টাকার কাজ হলেও এখনও এক টাকাও পাননি। এহ বাহ্য, পঞ্চায়েত ভোটের প্রায় আড়াই কোটি টাকার কাজও করেছেন ঠিকাদারেরা। সেই টাকাও বাকি।
এই অবস্থায় হুগলি জেলার ১৬ জন অনুমোদিত ঠিকাদার চরম বিপাকে পড়েছেন। বিধানসভা এবং পঞ্চায়েত ভোট মিলিয়ে তাঁদের বাকি রয়েছে প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা। এর জেরে তাঁদের সঙ্গে কাজ করা প্রায় এক হাজার শ্রমিকও বেকায়দায়। যদি টাকা না পান, লোকসভা ভোটে কাজ করতে পারবেন না ঠিকাদারেরা। হুগলি জেলার পূর্ত ভবনে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের কাছে বকেয়া টাকার দাবিতে মঙ্গলবার স্মারকলিপি জমা দেন ‘ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অফ হুগলি ইলেকট্রিক্যাল কনট্রাক্টরস’-এর সদস্যরা।
অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সৌম্য সরকার বলেন, ‘‘বিধানসভা ভোটের সময় টেন্ডার করে আমরা কাজ পেয়েছিলাম। মূলত কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকার জন্য যা বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা সব করেছি প্রশাসনের নির্দেশ মতো। এ ছাড়া নির্বাচনের অন্যান্য কাজও করেছি। লোডশেডিং হলে তার জন্য ডিজেল জেনারেটরও রাখা হয়েছিল। এত জন শ্রমিক কাজ করেছেন, তাঁদের মজুরি দিয়েছি আমরা। আর তা করতে গিয়ে অনেকেরই বিরাট ধারদেনা হয়ে গেছে। ২১ সালের কাজ, এখন ২০২৪ সাল হয়ে গেল, এখনও এক টাকা পাইনি। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরকে একাধিক বার জানিয়েছি কিন্তু সুরাহা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও আবেদন করছি, ম্যাডাম, আমাদের বাঁচান!’’ সৌম্যর কথায়, ‘‘আর কয়েক মাস পরেই লোকসভা ভোট। সেখানে যে কী করে কাজ করব, জানি না।’’
আর এক ঠিকাদার শেখর চন্দ বলেন, ‘‘আগামী দিনে টেন্ডারে অংশ নিতে পারব না। পূর্ত দপ্তরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবপ্রসাদ সামন্ত বলেন,‘‘আমাদের দফতরে আমি রিপোর্ট পাঠিয়েছি। বিধানসভা ভোটের কত টাকা বকেয়া আছে সেটা না দিলে আমি বকেয়া মেটাতে করতে পারছি না। যত ক্ষণ না তহবিল দিচ্ছে কবে পেমেন্ট হবে বলতে পারছি না। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আমি আবার সংশ্লিষ্ট দফতরে বিষয়টি জানাব।’’
সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধানসভা ভোটে বিদ্যুতের পরিকাঠামোর কাজ করেছিলেন এমন রাজ্যের সব জেলার ঠিকাদারদের বকেয়া রয়েছে ২৩০ কোটি টাকা। মঙ্গলবার হুগলি-সহ রাজ্যের মোট ১২টি জেলায় ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের কাছে বকেয়া মেটানোর দাবি জানানো হয়।