সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, আনিস-কাণ্ডে বিচার বিভাগের তত্ত্বাবধানে উচ্চ পর্যায়ের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে জেলা থেকে পুরসভা ও পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত আন্দোলন জারি থাকবে।
আনিস কাণ্ডের প্রতিবাদে নেমে গ্রেফতার হন মীনাক্ষী। —ফাইল চিত্র।
ছাত্র-নেতা আনিস খানের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করতে গিয়ে ধৃত সিপিএমের যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়-সহ ১৬ জনের শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর হল। হাওড়া জেলা আদালতের বিচারক সোমবার তাঁদের জামিনের আর্জি মঞ্জুর করলেও এ দিন অবশ্য তাঁরা ছাড়া পাননি। প্রয়োজনীয় প্র্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পরে আজ, মঙ্গলবার আলিপুর মহিলা সংশোধানাগার থেকে মীনাক্ষী এবং হাওড়া মল্লিক ফটক জেল থেকে বাকি ১৫ জনের ছাড়া পাওয়ার কথা। জেলবন্দি আন্দোলনকারীদের মুক্তি উপলক্ষে আজ হাওড়া জেলের সামনে এবং কলকাতায় রাসবিহারী মোড়ে জমায়েতের ডাক দিয়েছে বামেদের যুব ও ছাত্র সংগঠন।
আমতা থানায় লাগাতার বিক্ষোভ এবং পাঁচলায় হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার দফতর ঘেরাও কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে তুলকালাম হওয়ার পরে ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী-সহ ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, সরকারি কর্মচারীদের মারধর-সহ বেশ কিছু অভিযোগ এনেছিল পুলিশ। কেস ডায়েরি এবং পুলিশের ‘ইনজুরি রিপোর্ট’ খতিয়ে দেখার পরে এ দিন হাওড়া আদালতের বিচারক তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেছেন। প্রত্যেককে ১৫০০ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেওয়া হয়েছে। আদালতের তরফে তাঁদের জানানো হয়েছে, জামিনে মুক্ত ছাত্র-যুবদের তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। এর আগে তিন বার মীনাক্ষীদের জামিনের আর্জি নাকচ হয়েছিল। তাঁদের মুক্তির দাবিতে রাজ্য জুড়ে সই সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছে সিপিএমের যুব ও ছাত্র সংগঠন। শেষ পর্যন্ত গ্রেফতারের ১০ দিন পরে মীনাক্ষীদের জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, আনিস-কাণ্ডে বিচার বিভাগের তত্ত্বাবধানে উচ্চ পর্যায়ের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে জেলা থেকে পুরসভা ও পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত আন্দোলন জারি থাকবে। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী এ দিন দাবি করেছেন, ‘‘একটা রাষ্ট্রীয় খুন আড়াল করার জন্য সব রকম চেষ্টা করছে সরকার! ধৃত দুই পুলিশকর্মী বলেছিলেন, ওসি-র নির্দেশে কাজ হয়েছে। ওসি গ্রেফতার হননি, এসপি-র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী সিট গঠনের সময়ে ১৫ দিন সময়ের কথা বলেছিলেন, সেই সময়ও পেরিয়ে গিয়েছে। সিট গড়ে ধামাচাপা দিতে চাইলেও মানুষ এই অন্যায়ের বিচার করবেন।’’ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু অবশ্য ফের বলেছেন, ‘‘সকলকে অনুরোধ করব, মুখ্যমন্ত্রীর উপরে ভরসা রাখুন। এমন মানবিক মুখ্যমন্ত্রী আর কোথাও নেই। সরকার কোনও দলের হয় না, সরকার সকলের। তারা ঠিক তদন্তই করছে।’’