বিধানসভা ছাড়ছেন রাজ্যপাল। নিজস্ব চিত্র।
শাসক এবং বিরোধী বিধায়কদের বিতণ্ডার মাঝে সোমবার দুপুরে বিধানসভায় বাজেট ভাষণ সম্পূর্ণ না করেই চলে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এর পর বিকেলে রাজ্যপাল তৃণমূল এবং বিজেপি দু’পক্ষকেই ‘আত্মানুসন্ধানের’ পরামর্শ দিলেন। ভবানীপুরে শ্যামাপ্রসাদ ভবনের একটি কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। না ঘটলেই ভাল হত। দু’পক্ষকেই বলছি এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে।’’
বিধানসভায় শাসকদলের সদস্যেরা তাঁকে ‘মৌখিক এবং শারীরিক ভাবে’ বাধা দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন রাজ্যপাল। সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘পরিষদীয় বিধি অনুযায়ী এমন পরিস্থিতিতে মার্শালের হস্তক্ষেপ করার কথা। আমি বিধানসভার সচিবকে বলেছিলাম ‘মার্শালকে ডাকুন’। বিধানসভার সচিব দ্রুত মার্শালকে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। কারণ, এমন পরিস্থিতি মার্শালই নিয়ন্ত্রণ করেন। স্পিকার বা রাজ্যপালের পাশে দাঁড়ান। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মার্শাল হস্তক্ষেপ করতে রাজি হননি।’’ রাজ্যপালের মন্তব্য, ‘‘মার্শাল কি এমন করতে পারেন? পরিষদীয় বিধির এমন অবমাননা বেদনাদায়ক।’’
বিধাসভায় সোমবার রাজ্যপাল বাজেট বক্তৃতা শুরুর সময়েই বিজেপি-র বিধায়কেরা পুরভোটে সন্ত্রাসের প্রতিবাদ জানিয়ে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পাল্টা স্লোগান দেন তৃণমূলের বিধায়কেরাও। বিশৃঙ্খলার মাঝে বাজেট বক্তৃতার প্রথম এবং শেষ লাইন পড়েই চলে যেতে হয় রাজ্যপালকে। এই প্রসঙ্গে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘গণতন্ত্রে বিরোধী পক্ষকে ক্ষোভ প্রকাশের সুযোগ দিতে হয়। ট্রেজারি বেঞ্চের সদস্যেরা (মন্ত্রী এবং শাসকদলের বিধায়ক) রাজ্যপালকে মৌখিক এবং শারীরিক ভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। যা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’’
বিধানসভায় অশান্তির পরে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যপাল বাজেট ভাষণ না দিলে বাজেট অধিবেশন শুরু হত না। সে ক্ষেত্রে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরির আশঙ্কা ছিল। তবে রাজ্যপাল বিকেলে বলেছেন, ‘‘আমি চাই না রাজ্যে কোনও সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হোক।’’