অস্ত্রোপচারের পর হাসপাতালে রোশনি। রোশনির পেটে আটকে সুচ। নিজস্ব চিত্র।
খাবারের সঙ্গে পেটে ঢুকে গিয়েছিল তিন-তিনটি সূচ। প্রায় এক মাস পর জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কিশোরীর প্রাণ বাঁচালেন হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতলের চিকিৎসকরা। শুক্রবার অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকার জানিয়েছেন, আপাতত স্থিতিশীল শিবপুরের পিএম বস্তির বাসিন্দা রোশনি খাতুন নামে ওই কিশোরী।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস খানেক আগে এক পরিচিতের বাড়িতে গিয়ে খাবারের সঙ্গে ৫টি সূচ খেয়ে ফেলে রোশনি। অস্বস্তি হওয়ায় বমি করলে বেরিয়ে আসে দু’টি। কিন্তু খাবারের সঙ্গে আরও ৩টি সূচ যে পেটে চলে গিয়েছে, তা টের পায়নি সে। এর পর গত সপ্তাহ থেকে শুরু হয় রক্ত বমি। সঙ্গে পেট, গলা ও পিঠে প্রচণ্ড ব্যথা।
বাড়ির লোকেরা শিবপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক সিরাজ আহমেদকে দেখান। সূচ খেয়ে ফেলার কথা জানার পর এক্সরে এবং এন্ডোস্কপি করে চিকিৎসকরা জানতে পারেন, একটি কিডনিতে, একটি গলার নলি এবং তৃতীয় সূচটি রোশনির স্পাইনাল কর্ডে আটকে রয়েছে। এর পরেই চিকিৎসক সিরাজ আহমেদের নেতৃত্বে ৪ জন চিকিৎসকের একটি দল তৈরি করে শুক্রবার অস্ত্রোপচার হয় কিশোরীর। সফল অস্ত্রোপচারে সব কটি সূচই বের করে আনা হয়। ডক্টর আহমেদ বলেন, ‘‘কিডনিতে আটকে থাকা সূচটি বের করতে খুবই ঝুঁকি নিতে হয়। এটা সফল না হলে ইনফেকশন বেড়ে গিয়ে আরও জটিল আকার নিত।’’
কিন্তু খাবারের মধ্যে সূচ এল কোথা থেকে? এটা কি নিছকই দুর্ঘটনা, নাকি ইচ্ছাকৃত ভাবে কেউ রোশনিকে সূচ খাইয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল? পেশায় সবজি বিক্রেতা রোশনির বাবা আফতাব আলি বলেন, ‘‘মেয়েকে ইচ্ছে করে কেউ সূচ খাইয়ে দিয়েছিল কি না, সেটা জানতে পুলিশের দ্বারস্থ হব। তবে রোশনি নতুন করে জীবন ফিরে পাওয়ায় আমরা সবাই খুশি। চিকিৎসকদের অসংখ্য ধন্যবাদ।’’