—ফাইল চিত্র
ভোট-পর্ব মিটে যাওয়ার পরে সংক্রমণ হু হু করে বাড়তে পারে, সেই আশঙ্কায় হাওড়ায় ফের সেফ হোম চালু করার সিদ্ধান্ত নিল জেলা প্রশাসন। আপাতত সাঁকরাইলের রাবার পার্কে ১৩০টি শয্যার একটি সেফ হোম চালু করা হচ্ছে। এ ছাড়া ইতিমধ্যেই কোভিড হাসপাতালগুলিতে প্রতিদিন সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় সিসিইউ-এর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে হাসপাতালগুলিতে পাঠানো হচ্ছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ান।
হাওড়ায় যে ভাবে ভোটের প্রচারে মাস্ক না পরে মিটিং-মিছিল, দূরত্ব-বিধি না মেনে অবাধে জমায়েত করা হয়েছে, তাতে ভোট-পরবর্তী হাওড়ার পরিস্থিতি নিয়ে রীতিমতো শঙ্কিত চিকিৎসকেরা। হাওড়ায় আগামী শনিবার শেষ হচ্ছে চতুর্থ দফার ভোট। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আশঙ্কা, তার পরের ১৫ দিনের মধ্যে জেলার কোভিড পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। তখন হু হু করে বাড়তে পারে সংক্রমিতের সংখ্যা। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে হাওড়ায় একমাত্র চালু সরকারি কোভিড হাসপাতাল বালিটিকুরি ইএসআই হাসপাতালে ভেন্টিলেটরের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। বাড়ছে আইসিসিইউ ইউনিট ও হাই ডিপেন্ডেন্সি বা এইচডিইউ ইউনিটও।’’
ওই স্বাস্থ্যকর্তা জানান, এই মুহূর্তে সত্যবালা আইডি হাসপাতালে ১২ জন কোভিড রোগী ভর্তি রয়েছেন। জেলার অপর কোভিড হাসপাতাল— বালিটিকুরি ইএসআই-তে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ভর্তি ছিলেন ৮৯ জন কোভিড রোগী। বুধবার সেই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০২। এর মধ্যে বালিটিকুরি ইএসআই হাসপাতালের ২৫টি সিসিইউ শয্যাই ভর্তি। এইচডিইউয়ে ভর্তি আছেন পাঁচ জন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা মনে করছেন, আগামী ১০ তারিখ, শনিবার ভোট-পর্ব মিটে যাওয়ার পরে তার পরের ১৫ দিনের মধ্যে জেলার পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। তাই বালিটিকুরি হাসপাতালে ভেন্টিলেটরের সংখ্যা ২৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০টা করা হচ্ছে। একই ভাবে এইচডিইউ-এর সংখ্যাও ২৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হচ্ছে। দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘সংক্রমণ ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর বুধবারই করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছে। এখন দিনে ৫০০টি আরটিপিসিআর পরীক্ষা ও ৯০০টি অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, হাওড়ায় কোভিড রোগীদের জন্য ফের সেফ হোম খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে সব সংক্রমিত রোগীর বাড়িতে আলাদা থাকার মতো জায়গা নেই, গোষ্ঠী সংক্রমণ রুখতে তাঁদের সেফ হোমে রাখা হবে। গত বছরেও করোনা কালে সাঁকরাইলের এই রাবার পার্কেই সেফ হোম খোলা হয়েছিল। ১৩০টি শয্যাবিশিষ্ট এই সেফ হোমে থাকবেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।
তবে গত বছরের মতো এ বারে এখনই ডুমুরজলা ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সেফ হোম খোলা যাচ্ছে না বলেই জানাচ্ছেন জেলা প্রশাসনের এক কর্তা। কারণ, ওই স্টেডিয়ামের পাশেই রয়েছে হেলিপ্যাড, যেখান দিয়ে বর্তমানে ভোটের জন্য মন্ত্রী-নেতারা আসা-যাওয়া করছেন। ফলে আগামী ২ মে ভোটের ফলাফল বেরোনোর পরেই ওই স্টেডিয়ামটিকে সেফ হোম করা হবে কি না, সেই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।