শ্রমজীবী হাসপাতালের অক্সিজেন প্ল্যান্ট। — নিজস্ব চিত্র।
হুগলিতে আর কোনও হাসপাতাল-নার্সিংহোমে অক্সিজেন প্ল্যান্ট নেই। শ্রীরামপুরের শ্রমজীবী হাসপাতালে আছে। করোনা আবহে তার সুফল মিলছেও। কিন্তু চিকিৎসাধীন সংক্রমিতদের চাহিদা যে ভাবে বাড়ছে, তাতে বাইরে থেকেও বাকি অক্সিজেন জোগাড়ের চেষ্টা করতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। এই পরিস্থিতিতে অক্সিজেনের জন্য জেলার অন্য কোভিড হাসপাতালগুলির ‘লড়াই’টা ক্রমশ আরও কঠিন হবে বলেই মনে করছেন অনেকে।
শ্রমজীবীর সহ-সম্পাদক গৌতম সরকার বলেন, ‘‘আমাদের প্ল্যান্টের মাধ্যমে দৈনিক ৫৮টি সিলিন্ডারের অক্সিজেন বাতাস থেকে সংগ্রহ করা যায়। কিন্তু এখন চাহিদা তার চেয়েও বেশি। সরবরাহ ঠিক রাখতে অক্সিজেন সরবরাহকারী সংস্থার সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরকেও জানানো হয়েছে। আমাদের হাসপাতালে দৈনিক ৮৮ সিলিন্ডার অক্সিজেন প্রয়োজন হতে পারে।’’
১০০ শয্যার এই হাসপাতালে দৈনিক গড়ে ৪০টি অক্সিজেন সিলিন্ডারের দরকার হত। মাঝেমধ্যে নানা কারণে সরবরাহের সমস্যা মেটাতে হাসপাতালেই প্ল্যান্ট তৈরির পরিকল্পনা করেন কর্তৃপক্ষ। গত বছর ওই কাজ শুরুর মাঝেই লকডাউন হয়ে যায়। পরে, জুলাই-অগস্ট মাসে অক্সিজেনের জোগান কম থাকার সময় ইউনিটটি চালু করা হয়। তখন কিছু দিন সংগৃহীত অক্সিজেনের প্রায় পুরোটাই খরচ হচ্ছিল। বাইরে থেকেও সিলিন্ডার আনতে হয়েছিল। করোনার প্রকোপ কমতে থাকায় চাহিদা ফের চল্লিশে নেমে আসে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পরে গত শুক্রবার থেকে এই হাসপাতালে ফের কোভিডের চিকিৎসা চালু হয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পর্যবেক্ষণ, এ বার ভর্তি হওয়া রোগীদের অধিকাংশের শরীরেই অক্সিজেনের মাত্রা কম। কাউকে কাউকে হাইফ্লো ন্যাজ়াল অক্সিমিটার নামে আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে অতিরিক্ত চাপে অনেক বেশি পরিমাণ অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে চাহিদা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, রবিবার ভোরেই অক্সিজেনের পূর্ণ মাত্রা ছুঁয়ে ফেলায় প্ল্যান্টের যন্ত্র সঙ্কেত দিতে শুরু করে। তখন মজুত কিছু সিলিন্ডার ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে এখানে ৫৮ জন করোনা রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রায় সবাইকেই অক্সিজেন দিতে হচ্ছে।
গৌতমবাবু জানান, করোনা পর্বের আগে শ্রমজীবীতে যেমন চাহিদা ছিল, তার চেয়ে কিছুটা বেশি অক্সিজেন সংগ্রহের ক্ষমতাযুক্ত যন্ত্র বসানো হয়। কিন্তু করোনার জন্য তা-ও অপ্রতুল হয়ে গিয়েছে।