COVID19

এ বার টিকাকরণের গতি কমল হাওড়াতেও জোগানে ঘাটতি, ভ্যাকসিন নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে হুগলিতে

প্রথম ডোজ় পেতেও হয়রানির অভিযোগ কম নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২১ ০৭:২৯
Share:

অপেক্ষা: টিকা নেওয়ার লাইন আরামবাগ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।

চাহিদার সঙ্গে ভ্যাকসিন জোগানে ভারসাম্য না-থাকায় উত্তরপাড়ায় পুরসভার তরফে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সিদের সরাসরি টিকা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হল। এ বার থেকে শুধুমাত্র প্রশাসনের পাঠানো তালিকা অনুযায়ী ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। মোবাইলে বার্তা পাঠিয়ে পুরসভার তরফে উপভোক্তাদের নির্দিষ্ট দিন জানিয়ে দেওয়া হবে। শুক্রবার প্রশাসন, পুলিশ এবং পুর-কর্তৃপক্ষের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Advertisement

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ হুগলিকে ভালই ভুগিয়েছে। সংক্রমণ কমলেও এখনও পুরোপুরি চিন্তা যায়নি। বৃহস্পতিবারের সরকারি বুলেটিনে দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে হুগলি ছিল রাজ্যে দু’নম্বরে। উত্তর ২৪ পরগনার পরেই। তার উপরে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা তো রয়েছেই। এই পরিস্থিতিতে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সিদের টিকাকরণের কাজ যথাসম্ভব এগিয়ে রাখতে চাইছে বিভিন্ন পুরসভা। বিভিন্ন পেশায় যুক্ত এই বয়সিদের ‘সুপার স্প্রেডার’ হিসেবে চিহ্নিত করে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কাজের গতিতে বাদ সেধেছে ভ্যাকসিনের ঘাটতি। তাতে অবশ্য সব বয়সের লোকই সমস্যায় পড়ছেন।

ভোর থেকে লাইন দিয়েও বৃহস্পতিবার উত্তরপাড়া গণভবনে টিকা না-মেলায় লোকজন উষ্মা প্রকাশ করেন পুর-কর্তৃপক্ষের উপরে। পুলিশ পরিস্থিতি সামলায়। শুক্রবার ভ্যাকসিন পেতে আগের রাত ৯টা থেকে লাইন পড়ে। স্বাস্থ্যবিধি শিকেয় ওঠে। পুলিশ ডাকতে হয়। এরপরই বৈঠক করে প্রশাসন।

Advertisement

পুরপ্রশাসক দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার কম ভ্যাকসিন পাঠানোতেই সমস্যা। এখন থেকে স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশমতো অগ্রাধিকার প্রাপ্তদেরই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।’’ জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ভ্যাকসিনের ঘাটতি কয়েক দিনে অনেকটা মিটবে, আশা করছি।’’

গোঘাটের রায়খা গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব এক দম্পতি কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ় পেয়েছেন গত ২৭ মার্চ। দ্বিতীয় ডোজ়ের সময় ১৯ জুন থেকে ১৭ জুলাই। আকালের খবরে ১৯ জুন থেকেই দৌড়াদৌড়ি করেও তাঁরা ভ্যাকসিন পাননি। শেষে তাঁরা বিডিওকে ফোন করেন। বিডিও আশ্বাস দিয়েছেন, নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।

প্রথম ডোজ় পেতেও হয়রানির অভিযোগ কম নেই। কামারপুকুর লাহাবাজারের বছর ঊনচল্লিশের মিনতি নন্দী বলেন, ‘‘আমার আর বাইশ বছরের মেয়ের ভ্যাকসিনের জন্য স্বামী রোজ কামারপুকুর ব্লক হাসপাতালে খোঁজ নিচ্ছেন। কিছুই হয়নি। পঞ্চায়েত বলছে, নাম লিখে যেতে। পরে কুপন পাঠাবে। কিন্তু কবে পাঠাবে, আদৌ পাব কিনা, সেটাই চিন্তার।’’ মহকুমা প্রশাসনের দাবি, জোগানে ঘাটতি থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ে দ্বিতীয় ডোজ় পাননি, এমন কেউ নেউ।

পান্ডুয়ার পোটবা গ্রামের ৬২ বছরের শঙ্কর দে’র ক্ষোভ, ‘‘একাধিক দিন পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে গিয়েছি। কখনও অতিরিক্ত ভিড় দেখে, কখনও ভ্যাকসিন নেই শুনে বাড়ি ফিরেছি। কবে পাব, বুঝতে পারছি না।’’

কয়েক দিন ধরে হাওড়া জেলায় জোরদার টিকাকরণ হলেও শুক্রবার হোঁচট খেল। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, দৈনিক ৩০ হাজার টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এ দিন মাত্র ৮ হাজার জন তা পেয়েছেন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘পর্যাপ্ত টিকা না আসাতেই সমস্যা।’’ আগের তিন দিন ২৫ হাজারের উপরে টিকাকরণ হয়েছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement