করোনার প্রথম ডোজ নিলেন ৯৮ বছরের বৃদ্ধ। —নিজস্ব চিত্র।
সেই কবে বসন্তের টিকা নিয়েছিলেন। তার পর কেটে গিয়েছে দীর্ঘকাল। এ বার করোনার টিকা নিলেন শতায়ু হওয়ার পথে পা বাড়ানো মধ্য হাওড়ার বাসিন্দা সনৎ চট্টোপাধ্যায়। সোমবার বোস্টম পাড়ার তাঁর বাড়িতে গিয়ে ৯৮ বছরের বৃদ্ধকে টিকার প্রথম ডোজ দেন হাওড়া পুরনিগমের স্বাস্থ্যকর্মী।
নিজেকে শতায়ু বলে দাবি করলেও আদতে সনতের বয়স ৯৮। করোনার সংক্রমণের যা দাপট চলছে, তাতে খানিকটা দ্বিধা থাকলেও টিকা নেওয়ার ইচ্ছে ছিল। তবে দিব্যি হেঁটেচলে বেড়ালেও এই বয়সে বৃদ্ধের পক্ষে তা কতটা সুরক্ষিত, সে নিয়ে চিন্তায় পড়েছিলেন বাড়ির লোকজন। তাঁরা বলেন, “মানুষটা তো দিব্যি হেঁটেচলে বেড়াচ্ছেন। টিকা নিলে যদি শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়!” যদিও চিকিৎসকদের মতে, “টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে বয়সের কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই। তাই সনৎ টিকা নিতেই পারেন। কিন্তু তার আগে বৃদ্ধের শারীরিক পরীক্ষার প্রয়োজন।” হাওড়ায় টিকাকরণের সঙ্গে যুক্ত যুবরাজ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “টিকা নেওয়ার আগে পর্যন্ত ইতস্তত করছিলেন বৃদ্ধ। বছরখানেকের বেশি সময় বাইরে বার হননি তিনি। তবে শেষমেশ টিকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। শারীরিক পরীক্ষায় সব ঠিকঠাক থাকায় তাঁকে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”
সোমবার টিকা নেওয়ার পর সন্তুষ্ট সনৎও। তিনি বলেন, “সেই ছোটবেলায় বসন্তের টিকা নিয়েছিলাম। তার পর আজ (সোমবার) কোভিডের টিকা নিলাম।” রাজ্যে রাজ্যে করোনা যে হারে প্রাণহানি ঘটাচ্ছে, তা নিয়ে রীতিমতো ব্যথিত সনৎ। তিনি বলেন, “রোগীদের পরিষেবা দিতে গিয়ে এত ডাক্তার-নার্সদের মৃত্যু হল, তা ভাবলেও মনভার হয়ে যায়। সেই বিশ্বযুদ্ধের সময় যখন ব্ল্যাক আউট হত, তখন সাময়িক ভাবে এমন অবস্থা হয়েছিল। কিন্তু করোনার মতো অতিমারি দেখিনি।”
বৃদ্ধের টিকাকরণের মাধ্যমে বহু মানুষ টিকা নিতে উৎসাহিত হবেন বলে মত স্বাস্থ্যকর্মীদের। —নিজস্ব চিত্র।
বৃদ্ধের টিকাকরণের মাধ্যমে বহু মানুষ টিকা নিতে উৎসাহিত হবেন বলে মত স্বাস্থ্যকর্মী দেবযানী গুঁইয়ের। তিনি বলেন, “সনৎবাবু দেশের অন্যতম প্রবীণ নাগরিক। তাঁকে টিকা দিতে পেরে খুব আনন্দ হচ্ছে। এর মাধ্যমে সমাজের সর্বস্তরে টিকাকরণের বার্তা দেওয়াই আমাদের উদেশ্য।”