Illegal Construction

গঙ্গার ধারে পুরসভার বিরুদ্ধেই বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ

বিষয়টি নিয়ে চন্দননগরের ‘পরিবেশ অ্যাকাডেমি’ সংশ্লিষ্ট সব সরকারি দফতরে অভিযোগ জানিয়েছে। কিন্তু প্রতিকার মেলেনি বলে তাদের দাবি।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় 

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২২ ০৯:১২
Share:

শ্রীরামপুরে গঙ্গার পাড়ে পুরসভার এই নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র

এতদিন হুগলিতে মূলত প্রোমোটারদের বিরুদ্ধে নিয়ম ভেঙে গঙ্গার পাড়ে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ উঠছিল। এ বার নদীর পাড়ে পোর্ট ট্রাস্টের জমিতে বেআইনি ভাবে স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের অভিযোগ উঠল শ্রীরামপুর পুরসভার বিরুদ্ধেই। ইতিমধ্যে একতলার পিলার হয়ে গিয়েছে। ঢালাইয়ের প্রস্তুতি চলছে।

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে চন্দননগরের ‘পরিবেশ অ্যাকাডেমি’ সংশ্লিষ্ট সব সরকারি দফতরে অভিযোগ জানিয়েছে। কিন্তু প্রতিকার মেলেনি বলে তাদের দাবি। শ্রীরামপুরের পুরপ্রধান গিরিধারী সাহা অবশ্য বলেন, ‘‘ওখানে পুরসভার একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। এই বিষয়ে পোর্ট ট্রাস্টের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় অনুমতি পুরসভা নিয়ে নেবে।’’ অর্থাৎ, এখনও পোর্ট ট্রাস্টের অনুমতি নেয়নি পুরসভা।

হুগলির অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) নকুলচন্দ্র মাহাতো বলেন, ‘‘ওখানে আদতে ঠিক কী হচ্ছে নির্দিষ্ট ভাবে খোঁজ নেব। তারপরেই বিষয়টি নিয়ে বলা যাবে।’’

Advertisement

কোনও পুর এলাকায় বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ উঠলে প্রাথমিক ভাবে পুরসভাই বিষয়টি দেখে। তারপর বিধি অনুয়ায়ী তাদের তরফে পুলিশ-সহ সংশ্লিষ্ট দফতরে বিষয়টি জানানো হয়। সেই সব অভিযোগের ভিত্তিতে সরকারি স্তরে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয় বা প্রয়োজনে মামলাও করা হয়।

শ্রীরামপুরের বাসিন্দাদের একাংশ এবং ‘পরিবেশ অ্যাকাডেমি’-র প্রশ্ন, নিয়ম তো সব ক্ষেত্রেই সমান। সরকারি কোনও প্রকল্প বিধি ভেঙে হতে পারে না কি? আর পুর কর্তৃপক্ষই যদি বিধির কোনও তোয়াক্কা না করেন, তা হলে সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে পুরসভা কী করে ব্যবস্থা নেবে? তার উপর গঙ্গার ধারে বেআইনি নির্মাণের কারণে হুগলির বিভিন্ন এলাকা ভাঙনপ্রবণ হয়ে পড়েছে। শ্রীরামপুর পুর এলাকাও তাঁর ব্যতিক্রম নয়। এ ক্ষেত্রে গঙ্গার ওই অংশে ভাঙন দেখা দিলে সরকারি সম্পত্তির ক্ষতির আশঙ্কাও রয়েছে।

‘পরিবেশ অ্যাকাডেমি’র পক্ষে রাজ্যের পুর ও নগোন্নয়ন দফতরকে বিষয়টি নিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন, শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসক এবং পোর্ট ট্রাস্টের কাছেও চিঠি গিয়েছে। ‘পরিবেশ অ্যাকাডেমি’র কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খোদ মহকুমাশাসকের বাংলোর উল্টো দিকে গঙ্গার পাড়ে বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তা ছাড়া গঙ্গার গা-ঘেঁষে বেআইনি নির্মাণ করে ফেলার পর পুরসভা পোর্ট ট্রাস্টের থেকে আর কী অনুমতি নেবে? সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে নিয়ম— আগে নির্মাণের নকশা পুর কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমোদন করাতে হয়। তারপরে লিখিত অনুমতি মিললে তবেই নির্মাণ করা যায়। পুর কর্তৃপক্ষের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম আলাদা না কি?’’

পরিবেশবিদরা জানান,আদালত এবং পরিবেশ দফতরের নির্দেশিকা বলছে, যে নদীতে জোয়ার-ভাটা খেলে, তার ৪৭ মিটারের মধ্যে কোনও নির্মাণ করা যায় না। এ ক্ষেত্রে গঙ্গা থেকে ওই নির্মাণের দূরত্ব ৭ মিটারও নয়, এই দাবি করে বিশ্বজিৎবাবুর প্রশ্ন, সরকারি প্রকল্পে কি আদৌ বিধিভঙ্গ করা যায়?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement