স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে আটক সিভিক ভলান্টিয়ার। —নিজস্ব চিত্র ।
স্ত্রীকে পুড়িয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। শুক্রবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য হুগলির গুপ্তিপাড়াচর কৃষ্ণবাটি এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যে সিভিক ভলান্টিয়ায় বাবলু ও তাঁর পরিবারের দুই সদস্যকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ৭ বছর আগে বলাগড় থানার চর কৃষ্ণবাটি পঞ্চায়েতের ছোলারডাঙা গ্রামের বাসিন্দা বাবলু (পুকি)-র সঙ্গে বিয়ে হয় নদিয়ার শান্তিপুর থানার লক্ষ্মীনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা মামণি বিশ্বাসের। ওই দম্পতির ৬ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। মামণির মায়ের দাবি, বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়িতে অত্যাচারিত এবং লাঞ্ছিত হতেন তাঁর মেয়ে। তাঁদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে কাজ থেকে বাড়ি ফিরে মেয়ের উপর অত্যাচার শুরু করেন জামাই বাবলু। প্রথমে মামণিকে চড়থাপ্পড় মারেন বলাগড় থানার সিভিক ভলান্টিয়ার বাবলু। মারধরের পর স্ত্রী মারা গিয়েছেন, এই ভেবে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেন তিনি। অভিযোগ, এর পরেই বাড়ির উঠোনের কুয়োর পাড়ে নিয়ে গিয়ে স্ত্রীর গায়ে তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন তিনি।
বাড়িতে আগুন জ্বলছে দেখে আশেপাশের বাড়ির লোকজন ছুটে আসেন। তাঁদেরই কেউ মামণির বাপের বাড়িতে খবর দেন। মামণির মা বলেন, ‘‘বিয়ের পর থেকেই মেয়েকে মেনে নিতে পারেনি ওর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। আমার মেয়েকে ওরা মেরে ফেলেছে।’’
মৃতার দাদা তারক বিশ্বাসের কথায়, ‘‘বোনের শ্বশুরবাড়ির কোনও প্রতিবেশী ফোন করেন আমাদের। বলা হয় বাড়িতে চরম অশান্তি চলছে। আমরা বোনকে ফোনে না পেয়ে রাত ১টার সময় ওর শ্বশুরবাড়িতে চলে আসি। রাস্তাতেই দেখা হয় জামাইয়ের সঙ্গে। কিন্তু সে বলে, কিছু হয়নি। পরে দেখি আমার বোনের দেহ পুলিশের সাহায্যে কালনা হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে। জানতে পারি, ঘরেই বোনকে মেরে ফেলেছে। মেরে ফেলার পর উঠনে এনে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘বোনের বর সিভিক ভলান্টিয়ার। প্রমাণ লোপাটের সব রকম চেষ্টা করেছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় বিশ্বাস জানান সিভিক ভলান্টিয়ার বাবলুর বাড়িতে অত রাতে পুলিশ দেখে তাঁরা ওই বাড়িতে যান। গিয়ে দেখেন দগ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে মামণি। সঞ্জয়ের কথায়, ‘‘গিয়ে দেখি ওর বৌ উঠোনে কোণে কুয়োপাড়ে পড়ে আছে। মাথা আর পায়ের দিকটা আগুনে পুড়ে গিয়েছে।’’