Primary School

স্কুলেই ন্যায্য মূল্যের দোকান খুলে চালাচ্ছেন শিক্ষকেরা! মালদহের স্কুলে পড়াশোনা শিকেয়

স্থানীয়দের অভিযোগ, স্কুল খোলার আগে ঠিক মতো প্রার্থনাও হয় না হরিশ্চন্দ্রপুরের হলদিবাড়ি প্রাথমিক স্কুলে। জাতীয় সংগীত চলাকালীন নাকি বসে থাকেন শিক্ষকেরা। স্কুলে শিক্ষকরা নিয়মিত আসেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হরিশ্চন্দ্রপুর শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২২ ২০:৫৫
Share:

স্কুলে ন্যায্য মূল্যের দোকান! —নিজস্ব চিত্র।

নামেই সরকারি প্রাথমিক স্কুল। কিন্তু নিয়মিত ভাবে সেখানে ক্লাস হয় না। স্কুলের ভিতরে ন্যায্য মূল্যের দোকান খুলে চালান শিক্ষকেরা। এমনই অভিযোগ উঠল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে। শুক্রবার এই সব অভিযোগ তুলে শিক্ষকদের ঘিরে রেখে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকেরা। তাঁদের অভিযোগ, না পড়িয়ে পড়ুয়াদের স্রেফ বসিয়ে রাখা হয় ক্লাসঘরে।

Advertisement

ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক তথা হরিশ্চন্দ্রপুর-১ (বি) ব্লক তৃণমূল সভাপতি মানিক দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিয়মিত স্কুল আসেন না। ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আর এক শিক্ষক হিমাংশু দাস এবং তাঁর স্ত্রী পিঙ্কি দাস আবার বিদ্যালয়ের ভেতরে দোকান খুলেছেন বলে অভিযোগ। স্থানীয়ের আরও অভিযোগ, ঠিক ভাবে ক্লাস না করে স্কুলের বাচ্চাদের দোকানে বসানো হচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, স্কুল খোলার আগে ঠিক মতো প্রার্থনাও হয় না হরিশ্চন্দ্রপুরের হলদিবাড়ি প্রাথমিক স্কুলে। জাতীয় সঙ্গীত চলাকালীন নাকি বসে থাকেন শিক্ষকেরা। প্রতি দিন এমন ঘটনা দেখে শুক্রবার শিক্ষকেরা বিদ্যালয়ে আসতেই ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। অজয় রায় নামে এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘এ রকম বিদ্যালয়ে এসে বাচ্চারা কী শিখবে! বাচ্চাদের দিয়ে ঝাঁট দেওয়ানো হচ্ছে। শিক্ষকেরা দাঁড়িয়ে থেকে এই কাজ করাচ্ছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার নাতনি এই স্কুলে পড়ে। টিউশন না দিলে তো কোনও কিছু শিখতে পারবে না বাচ্চারা!’’

Advertisement

আর এক অভিভাবক শ্রবণ দাস বলেন, ‘‘শিক্ষক হিমাংশু দাস স্কুলের ভিতরে দোকান খুলেছেন। ক্লাস তো একদম হয় না। মানিকবাবু হয়তো অন্য কাজ নিয়েই বেশি ব্যস্ত। তাই স্কুলেও আসেন না।’’

যদিও অভিযুক্ত মানিক দাসের দাবি, এই সমস্ত অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। তাঁর দাবি, তিনি নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন। তিনি এই বিক্ষোভের নেপথ্যে রাজনীতি দেখছেন। মানিক বলেন, ‘‘যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাঁরা বিরোধী দলের সঙ্গে যুক্ত। যাঁরা বিক্ষোভ দেখালেন, তাঁরা রাজনৈতিক কারণেই দেখালেন। আর ন্যায্যমূল্যের দোকানের ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারব না। এটা প্রধানশিক্ষক বলবেন।’’ যদিও বিক্ষোভ চলাকালীন স্কুলে ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক সাদিকুল হকের দেখা মেলেনি। পরেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

অন্য দিকে, এই ঘটনায় শাসকদলকে তীব্র আক্রমণ করেছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি নেতা কিষাণ কেডিয়া বলেন, ‘‘তৃণমূল আমলে শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।’’ পুরো ঘটনায় রাজনৈতিক চাপান-উতোর তুঙ্গে উঠেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement