ধৃত সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী। —নিজস্ব চিত্র।
থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে গভীর রাতে লালবাতি দেওয়া গাড়িতে চড়ে দুই সঙ্গীকে নিয়ে মদ্যপান করছেন এক পুলিশ আধিকারিক! কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই ভুল ভাঙল আসল পুলিশের। জানা গেল, উর্দি পরিহিত সেই যুবক আসলে নকল পুলিশ আধিকারিক। এই ঘটনা ঘটেছে হুগলির চন্দননগরে। পুলিশ ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে।
চন্দননগর পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত ১১টা নাগাদ চন্দননগর স্ট্র্যান্ডের রানিঘাট এলাকায় নীলবাতি এবং হুটার লাগানো একটি গাড়ি দেখতে পান পুলিশকর্মীরা। গাড়িটিতে ‘গভর্নমেন্ট অব ওয়েস্টবেঙ্গল’ স্টিকারও লাগানো ছিল। তা দেখেই সন্দেহ হয় কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের। পুলিশকর্মীরা গাড়িটিকে আটক করেন। তাঁরা গাড়ির মধ্যে পুলিশের পোশাক পরা এক যুবককে দেখতে পান। ওই যুবক নিজেকে ডিএসপি হিসাবে পরিচয় দেয়। তাঁর উর্দির কাঁধে ছিল তিনটি তারা। বুকে ঝোলানো নেমপ্লেটে লেখা ছিল, সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী। হুবহু এক ডিএসপির মতোই তার পোশাক। দেখে বোঝার উপায় নেই। কিন্তু যুবক মুখ খুলতেই মদের গন্ধ পান কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা। এক জন ডিএসপি পদমর্যাদার আধিকারিক এ ভাবে স্ট্র্যান্ডে মদ্যপান করছেন! এটা দেখেই সন্দেহ করেন কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা। পুলিশ সিদ্ধার্থকে গ্রেফতার করেছে। একই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে, অমর পাল এবং সুকুমার চট্টোপাধ্যায় নামে তার আরও দুই সঙ্গীকেও।
সিদ্ধার্থকে থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে আসে নকল পুলিশের আসল কথা। জানা যায়, বছর ত্রিশের সিদ্ধার্থ বক্সি গলি এলাকার বাসিন্দা। সে এক সময় মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসাবে কাজ করতেন বলেও দাবি করেছেন তিনি। সিদ্ধার্থ আরও জানিয়েছেন, ২০১৩ সালে তিনি চন্দননগর গভর্নমেন্ট কলেজ থেকে ইংরাজি সাহিত্যে স্নাতক হন। এক সময় তিনি গাড়িচালক হিসাবেও কাজ করেছেন। সেই সুবাদে জেলা প্রশাসনের গাড়িচালকদের সঙ্গেও তাঁর ভাব জমে ওঠে। বর্তমানে তিনি বেকার বলেই নিজেকে দাবি করেছেন। পুলিশকে সিদ্ধার্থ জানিয়েছেন, তিনি বিবাহিত। পুলিশের পোশাক পরে সিদ্ধার্থ ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করতেন কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের হয়েছে।