চালককে নানা কৌশলে বোকা বানিয়ে একের পর এক টোটো চুরি। তার পর তা বিক্রি করে দেওয়া। এমনই কারবার চালাচ্ছিলেন স্বামী-স্ত্রী মিলে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফাঁস হয়ে গেল তাঁদের কীর্তি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে চন্দননগর কমিশনারেট।
ভদ্রেশ্বর থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক দিন ধরেই এলাকায় টোটো চুরির অভিযোগ উঠছিল। এর পরই চোর ধরতে একটি বিশেষ দল তৈরি করে চন্দননগর পুলিশ। গত ২৯ অগস্ট ভদ্রেশ্বরের গৌরহাটির বাসিন্দা মহম্মদ রিয়াজুদ্দিনের টোটো চুরি হয়, স্থানীয় লাইব্রেরি রোড থেকে। তিনি অভিযোগ করেন, এক দম্পতি তাঁর চোটো চুরি করেছে। এর পর সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। স্থানীয় সব গ্যারাজেই খোঁজখবর করেন তদন্তকারীরা। একটি গ্যারাজ থেকে ওই দম্পতির ফোন নম্বর পায় পুলিশ। ফোনের সূত্র ধরে ওই দম্পতির হদিশও পায় পুলিশ। পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশের দাবি, রাহুল বিশ্বাস এবং পিয়া বিশ্বাস নামে ওই দম্পতি কয়েকমাস আগে বৈদ্যবাটির কাজিপাড়া থেকে ভদ্রেশ্বরের রামকৃষ্ণ পল্লিতে বাড়ি ভাড়া নেয়। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ভরদুপুরে বা সন্ধ্যার সময় টোটো ভাড়া করত পিয়া। তার সঙ্গে থাকত ভারী ব্যাগ। এর পর কোনও নির্জন গলিতে নেমে পিয়া টোটোচালককে তার ভারী ব্যাগ বইতে সাহায্য করার কথা বলত। সেই ফাঁদে পা দিয়ে, চালক ব্যাগ নিয়ে কিছু দূর গেলেই রাহুল টোটো নিয়ে পালিয়ে যেত। সরে পড়ত পিয়াও। এই ভাবে তারা টোটো চুরি করত। পরে কৌশল পাল্টায় ওই দম্পতি। স্যানিটাইজারের মধ্যে অজ্ঞান করার রাসায়নিক মিশিয়ে চালকের নাকে স্প্রে করে টোটো চুরি করার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, শেওড়াফুলিতে একটি দোকান ছিল রাহুলের। লকডাউনের জেরে সেই দোকান বন্ধ হয়ে যায়। এর পর রাহুল টোটো ভাড়া করে চালাতে শুরু করে। কিছু দিন টোটো চালানোর পর মালিকের টোটোই বিক্রি করে সে পালিয়ে আসে ভদ্রেশ্বরে। এ ভাবেই তার চুরিবিদ্যায় হাতেখড়ি। এর পর ভদ্রেশ্বরে এসে সে আয়ের রাস্তা হিসাবে বেছে নেয় সেই টোটো চুরিকেই।