জল চুরি রুখতে পদক্ষেপ। — ফাইল চিত্র।
গরম বাড়ছে। জলস্তর হু হু করে নামছে। যথারীতি পানীয় জলের সমস্যা তীব্র হয়েছে হাওড়া জেলার বাগনানের দু’টি ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায়। নল থেকে জল পড়ছে সরু সুতোর মতো। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পাইপ লাইন থেকে জল ‘চুরি’ রুখতে জোর দিল দুই ব্লক প্রশাসন। শুরু হচ্ছে অভিযান। জল অপচয় রুখতে সাধারণ মানুষকে সচেতন করছেন প্রশাসনের আধিকারিকরা।
বাগনানের দু’টি ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় বাড়ি বাড়ি নলবাহিত পানীয় জল সরবারাহ করা হয়। এক দিকে যেমন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর জল দেয়, তেমনই আবার পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিগুলিও ‘পাম্প হাউস’ তৈরি করে জল সরবরাহ করে। জানা গিয়েছে, সমস্যা দেখা দিয়েছে বিভিন্ন পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির পাম্পের জল নিয়েই।
প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, গরমের সময়ে প্রতি বছরই বাগনানে জলস্তর প্রায় ৫০ ফুট করে নেমে যায়। ফলে, জলের সঙ্কট হয়ই। এ বছর চৈত্র শেষের তীব্র গরমে জলস্তর নেমে গিয়েছে প্রায় ৭৫ ফুট। সেই কারণে এ বার অন্য বছরের তুলনায় জলের সমস্যা আরও তীব্র হয়েছে। এর সঙ্গে ‘জল চুরি’ পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
বাগনান-১ ব্লক প্রশাসনের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, যে সব বাড়িতে নলবাহিত জল দেওয়া হচ্ছে, তার মধ্যে অনেক ক্ষেত্রেই নলের সঙ্গে যন্ত্র লাগিয়ে প্রচুর জল তুলে নিয়ে বাড়ির ‘রিজ়ার্ভারে’ রেখে দিয়ে যথেচ্ছ ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্লক প্রশাসনের একটি সূত্রের অভিযোগ, এই ভাবে বাড়তি জল তুলে নেওয়ার ফলে জলের অপব্যবহার হচ্ছে, সঙ্কটও তৈরি হচ্ছে। একই কথা জানিয়েছেন বাগনান-২ ব্লক প্রশাসনের কর্তারাও। এই পরিস্থিতিতে জলের পর্যাপ্ত জোগান নিয়ে চিন্তায় পড়েন প্রশাসনের কর্তারা। তাঁরা মনে করছেন, ‘জল চুরি’ আটকাতে না পারলে, সঙ্কট আরও বাড়বে।
জলসঙ্কট মোকাবিলায় সম্প্রতি বাগনান-১ ব্লক অফিসে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দু’টি ব্লকের প্রশাসনিক কর্তারা, দু’টি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের বাস্তকাররা। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাগনানের বিধায়ক অরুণাভ সেন। সেই বৈঠকেই আলোচনার সূত্রে ‘জল চুরি’র বিষয়টি ওঠে। ঠিক হয়, ‘জল চুরি’ রুখতে প্রশাসনের তরফে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।