১০ বছর আগে এক বার ডাকাতি হয় তাঁর দোকানে। হাওড়ার কদমতলার যিশু জানতে পেরেছেন ব্যারাকপুরের আগে তাঁর দোকানই ছিল ডাকাতদের প্রথম টার্গেট। —প্রতীকী চিত্র।
উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরের আনন্দপুরীর নামী গয়নার দোকান নয়, ডাকাতদলের প্রথম টার্গেট ছিল হাওড়ার কদমতলার একটি সোনার দোকান। ক্রেতা সেজে গয়না কিনতে যায় এক ডাকাত। দোকান লুটও হয়ে যেত। কিন্তু সকাল সকাল ওই দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বেশি মাত্রায় থাকায় পরিকল্পনা বাতিল করে ওই ডাকাতদল। তার পরই বুধবার আনন্দপুরীর সোনার দোকানে ডাকাতি এবং খুনের ঘটনা ঘটে। তদন্তে নেমে এমনই তথ্য পেল পুলিশ। আর তদন্তকারীদের কাছ থেকে সেই কথা জানতে পারার পর আতঙ্কে ভুগছেন কদমতলার গয়না ব্যবসায়ী যিশুকৃষ্ণ আড়ি।
যিশু জানান, শুক্রবার সকালে সন্দেহভাজন দুষ্কৃতীদের নিয়ে তাঁর দোকানে উপস্থিত হন হাওড়া সিটি পুলিশ এবং ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশের পদস্থ কয়েক জন কর্তা। ওই ডাকাতদলের কী পরিকল্পনা ছিল, কোথা থেকে কোন পথে তারা যাতায়াত করেছে— এমন নানা তথ্য আটক হওয়া দুষ্কৃতীদের কাছে জানতে চায় পুলিশ। সেখান থেকেই যিশু জানতে পারেন যে ব্যারাকপুরের আগে তাঁর দোকানই ছিল ডাকাতদের প্রথম টার্গেট।
দোকানমালিক যিশু বলেন, ‘‘গত ১৮ মে ওই দুষ্কৃতীদের মধ্যে কেউ আমার দোকানে একটি রুপোর চেন কিনতে এসে দোকান দেখে যায়। এর পরে এই এলাকার সমস্ত রাস্তাঘাট ঘুরে দেখে। রেইকি করে তারা। ছক ছিল ২৪ মে, মঙ্গলবার আমার দোকান লুট করবে তারা। সেই মতো ওই দিন সকাল সকাল দোকানের বাইরে চলে এসেছিল ওরা।’’ প্রসঙ্গত, এর পরের দিন অর্থাৎ, ১৯ মে ব্যারাকপুরে সোনার দোকানে হাজির হয় ওই দুষ্কৃতীরা। লুট করতে গিয়ে গুলি চালায় তারা। ডাকাতিতে বাধা দিতে গিয়ে মৃত্যু হয় দোকানমালিকের পুত্র নীলাদ্রি সিংহের। কিন্তু কদমতলার সোনার দোকানে ডাকাতির পরিকল্পনা কেন বাতিল হয়? দোকানমালিক জানান, তিনি পুলিশের কাছে জানতে পেরেছেন মঙ্গলবার সকাল থেকে তাঁর দোকানে খুব ভিড় থাকায় ছক পাল্টে ফেলে ডাকাতদল। এর পর তারা সোজা ব্যারাকপুরে গিয়ে অপারেশন চালায়।
তদন্তের সুবিধার জন্য কদমতলার সোনার দোকানের গত কয়েক দিনের সিসিটিভি ফুটেজ নিয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের কাছে গোটা ঘটনা জানার পর কপালে ঘাম দোকানমালিক যিশুর। তাঁর কথায়, ‘‘পুরো বিষয় জানার পর থেকে আমি আতঙ্কিত। নিরাপত্তাহীনতাতেও ভুগছি। আমার মনে হয় গোটা এলাকায় যেন পুলিশি টহলদারি আরও বাড়ানো হয়।’’ এ নিয়ে হাওড়া স্বর্ণ ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে একটি আবেদনও করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। যিশু জানান, বছর দশেক আগে তাঁর দোকানে এক বার ডাকাতি হয়। তাই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন তিনি।