চলছে আলো পরীক্ষা (উপরে) আলোয় ফুটে উঠবে এমনই কাজ। নিজস্ব চিত্র।
গত কয়েক বছর ধরে দীপাবলি ও ধনতেরসে অযোধ্যার রামমন্দির চত্বর সাজছে হুগলির চন্দননগরের বিদ্যালঙ্কার আলোকশিল্পী মনোজ সাহার আলোয়। ইচ্ছা ছিল, মন্দির উদ্বোধনেও তাঁর আলোয় আলোকিত হোক অযোধ্যা। গত বৃহস্পতিবার রাতে মন্দির কমিটির তরফে বরাত পেয়ে ইচ্ছাপূরণ এখন সময়ের অপেক্ষা। গঙ্গাপাড়ের শহর থেকে শনিবারই আলো পাড়ি দিল সরযূপাড়ের ‘রামরাজ্যে’। আগামী ২২ জানুয়ারি রামমন্দিরের উদ্বোধন করার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মনোজের কারিকুরিতে চন্দননগরের আলোর জাদু দেখবে দেশ।
হাতে সময় বেশি নেই। বরাত মিলতেই ব্যস্ততা তুঙ্গে মনোজের সংস্থায়। শনিবার সন্ধ্যায় ট্রাকে আলো নিয়ে অযোধ্যায় রওনা হলেন জনা পঁচাত্তর কারিগর। আজ, রবিবার আরও ৭৫ জনের ট্রেনে যাওয়ার কথা। তাঁদের মধ্যে ৫০ জন আলোর কারিগর। বাকিরা ডেকরেটর, ঝালাই মিস্ত্রি, রাঁধুনি। সকলেই
চন্দননগরের বাসিন্দা।
মনোজ জানান, ঝড়-জলে ‘এলইডি’ বেশি দিন টেকে না। বরাত অনুযায়ী, আগামী এক বছর উদ্বোধনের আলো জ্বলবে রাম জন্মভূমিতে। তাই, ‘এলইডি’র বদলে ‘স্ট্রিপ’ (তার থাকে ফিতের আকারে প্লাস্টিকের মোড়কে। তাই দ্রুত নষ্ট হয় না। বাল্বের ঔজ্জ্বল্য এলইডি-র তুলনায় কম।) আলোয় ফুটবে নানা কারুকার্য। লোহার খাঁচায় ‘স্ট্রিপ’ আলো বসিয়ে ৩০০টি গেট, রাম-সীতার মুখ, রামমন্দির প্রভৃতি ফুটিয়ে তোলা হবে। গেটের থিম— রামের কপালের তিলকের নকশা। ১০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে থাকবে গেটগুলি। প্রতি গেটেই মধ্যমণি হিসেবে জ্বলবে ‘রাম-তিলক’। মন্দিরেও রামের জীবনী সংবলিত বিভিন্ন সময়ের অবয়ব ফুটিয়ে তোলা হবে। থাকবে আলোয় তৈরি রামের মূর্তি।
বরাতের টাকার পরিমাণ না-জানালেও মনোজ বলেন, ‘‘বর্গফুট অনুযায়ী দাম ধার্য হয়েছে। মোট ৪০ হাজার বর্গফুটের কাজ।’’ সাধারণ হিসাবে ওই কাজের অঙ্ক কোটি টাকা ছড়ানোর কথা বলে আলোকশিল্পীদের একাংশ জানান। মনোজ জানান, চন্দননগর থেকে শুধু সামগ্রী যাচ্ছে। আলোকসজ্জা তৈরি করা হবে অযোধ্যায় বসে। কাল, সোমবার থেকে সেই কাজ শুরু হবে। শেষ করতে হবে ২১ তারিখের মধ্যে। দেখভালের জন্য আগামী এক বছর জনা দশেক কারিগর সেখানে থাকবেন।
এমন ‘হাই ভোল্টেজ’ উৎসবে আলো লাগানোর সুযোগ মেলায় স্বাভাবিক কারণেই মনোজ খুশি। উপরি পাওনা, উদ্বোধনে উপস্থিত থাকতে পারা। সে কথা ভেবে উত্তেজিত কারিগরেরাও। বাবাই পাল নামে এক কারিগরের কথায়, ‘‘কত নামী মানুষকে দেখার সুযোগ হবে। সঙ্গে রামলালার দর্শন!’’