হাওড়ায় উদ্ধার হওয়া অ্যালবিনো পাম সিভেট। ছবি: সংগৃহীত।
বিরল সাদা ভাম উদ্ধার হল হাওড়ার পাঁচলা থেকে। স্থানীয় সূত্রের খবর, গোলাবাড়ি এলাকায় একটি বাড়ির লাগোয়া গুদাম ঘরে এক মাদি ভাম (এশিয়ান পাম সিভেট) চারটি শাবক প্রসব করেছিল। ছানাগুলি ভালই বড় হচ্ছিল। কেউ তাদের বিরক্তও করেনি। কিন্তু দিন কয়েক আগে থেকে তাদের মা আর আসেনি। ফলে ছানাগুলি খিদের জ্বালায় চিৎকার করতে থাকে এবং বাড়ির বিভিন্ন ঘরে ঢুকে পড়ে। এর পরে গৃহকর্তা যোগাযোগ করেন হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চের সদস্য শুভঙ্কর কোলে ও শুভজিৎ মাইতির সাথে।
খবর পেয়ে তাঁরা দু’জন ভামশাবকগুলি উদ্ধার করতে গিয়ে দেখেন চারটি ছানার মধ্যে একটি সাদা রঙের ভাম। তারা ছানাগুলি উদ্ধার করে আনার পর প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে জেলা বনবিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বনবিভাগ ভামশিশুগুলি গড়চুমুক প্রাণী চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যায়। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণকারী চিত্রক প্রামাণিক বলেন, ভাম বিরল নয়। কিন্তু অ্যালবিনো ভাম সাধারণ ভাবে দেখা যায় না। অ্যালবিনিজ়ম্ একটি জিনগত মিউটেশন। প্রাণীজগতে অ্যালবিনিজ়ম্ বা পিগমেন্টেশন্ এর অভাবে দেহের ত্বকের রঙ ফ্যাকাশে বা সাদা হয়ে যায়। লিউসিজম্ এর জন্য চোখের রঙ কালো থাকলেও অ্যালবিনো প্রাণীর চোখের রঙ লাল হয়।
জিনগত মিউটেশনের কারণে কোষে টায়রোসিনেজের অনুপস্থিতি দেখা দিলে প্রাণীটিকে ‘প্রকৃত শ্বেত’ বা অ্যালবিনো বলা হয়৷ অন্যদিকে, ত্বকে রঞ্জকপদার্থ ‘মেলানিনের’ উপস্থিতির অভাবে ‘লিউসিস্টিক’ প্রকৃতির প্রাণী সৃষ্টি হয়৷ মধ্যপ্রদেশের রেওয়ার সাদা বাঘ এরই উদাহরণ৷ ২০২১ সালে ওড়িশার সাতকোশিয়া টাইগার রিজার্ভে অ্যালবিনো ভাম দেখা গিয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গে সম্ভবত এই প্রথম। এর আগে ২০১৮-য় সুন্দরবনে পাখিসুমারিতে গিয়ে একটি সাদা ভোঁদড় ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন কলকাতার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের কাজে যুক্ত সংগঠন প্রকৃতি সংসদের সদস্যেরা। সেটি ছিল বিশ্বে তৃতীয় বার সাদা ভোঁদড়ের উপস্থিতির প্রমাণ।