অধীর চৌধুরী ও আব্দুল মান্নান। — ফাইল চিত্র
খোদ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছিলেন, আইএসএফ-এর সঙ্গে কংগ্রেসের কোনও দিন জোট হয়নি। যা হয়েছিল তা বামেদের সঙ্গে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়ে কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান জানালেন, আইএসএফ-এর সঙ্গে জোট ছিল এবং আছে। এ নিয়ে তিনি ‘টম, ডিক, হ্যারি’র কথা শুনবেন না।
আইএসএফ-এর সঙ্গে কোনও জোট হয়নি কংগ্রেসের। অধীরের এই ঘোষণার পর, রবিবার মান্নানের ফুরফুরা সফর রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। উঠে আসে বহু প্রশ্নও। সেখানে মান্নান বলেন, ‘‘প্রদেশ কংগ্রেসে আমার থেকে প্রবীণ কেউ নেই। এক নাগাড়ে আমি দল করছি। আমি সোনিয়া গাঁধী এবং রাহুল গাঁধীর নির্দেশে চলি। আমি যা করেছি, তা তাঁরা জানতেন। এখনও যা করছি, তা তাঁরা জানেন। অতএব কে, কী বলছেন, না বলছেন তাতে আমি গুরুত্ব দিই না। সোনিয়া গাঁধী যদি আমাকে বলে দেন, তুমি আর জোটের মধ্যে যেও না তা হলে আমি যাব না। আমি সোনিয়া গাঁধীর নির্দেশ মানি।’’মান্নানের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘২০১১ সালে প্রার্থী না হওয়ার জন্য তৃণমূল আমাকে অনেক অফার দিয়েছিল। তখন আমি যাইনি। তখন এই বাবুরা, যাঁরা বড়বড় কথা বলছেন, তখন একটা কথা বলেননি। জোট করেছিল দিল্লি। দিল্লিই বলবে জোট আছে কি নেই। আমি দলের প্রতি বিশ্বস্ত। তবে টম, ডিক, হ্যারি যদি মনে করে আমাকে নিয়ন্ত্রণ করবে, তা হলে আমি তা সহ্য করব না। আমি কারও কথায় চলি না।’’
সম্প্রতি আইএসএফ-এর সঙ্গে জোটের কথা উড়িয়ে দিয়েছিলেন অধীর। গত ২১ জুন বহরমপুরে সাংবাদিক বৈঠকে অধীর বলেন, ‘‘ ‘‘মুর্শিদাবাদ জেলাতে আইএসএফ আমাদের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছিল। তাই ওদের সঙ্গে জোট আমাদের আগেও ছিল না। আগামী দিনেও থাকবে না।’’ এর পর ফুরফুরায় গিয়ে মান্নানের ‘টম, ডিক, হ্যারি’ মন্তব্য কি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে নিশানা করেই? এই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। রবিবার মান্নানের মন্তব্যে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, আইএসএফ-এর সঙ্গে জোট নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির বিপরীত মেরুতেই অবস্থান করছেন তিনি,
মান্নানের ফুরফুরা সফর নিয়ে আইএসএফ বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকীর বক্তব্য, ‘‘আমি অনভিজ্ঞ। আবদুল মান্নান বিধানসভা নিয়ে আমাকে নানা পরামর্শ দিয়েছেন। আমার লড়াইটা ২৯৩ জনের বিরুদ্ধে। আগামী দিনে সংযুক্ত মোর্চা কী ভাবে এগোবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’’ আর জোট নিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘রাজ্যের দুই বর্ষীয়ান নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং আবদুল মান্নানকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা উচিত। কারণ জোট নিয়ে আলোচনা হয়েছে তাঁদের সামনেই। তাঁরা যদি বলেন, জোট ভেঙে গিয়েছে তা হলে আমরাও আনুষ্ঠানিক ভাবে বলতে পারব আমাদের সঙ্গে কংগ্রেস আর নেই।’’ বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল অধীরের সঙ্গে। কিন্তু যোগাযোগ করা যায়নি।