প্রতিবাদ করায় লাঠি দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হল মহিলার। প্রতীকী ছবি।
বাড়ি ভাড়া নিয়ে চলছিল বিয়ের অনুষ্ঠান। বর পৌঁছনোর পরপরই পাত্রপক্ষের লোকজন বিয়েবাড়ির সামনে রাস্তার উপরে শব্দবাজি ফাটাতে শুরু করেন। সেই সঙ্গেই চলতে থাকে তারস্বরে ডিজে-র গান ও উদ্দাম নাচ। মাধ্যমিক পরীক্ষাশুরু হওয়ার ঠিক আগের রাতে এ ভাবে নিয়ম ভেঙে সাউন্ড বক্স বাজানো তো হচ্ছিলই। সেই সঙ্গে রাস্তা জুড়ে নাচ-গান করায় আটকে পড়েছিল রোগী সমেত অ্যাম্বুল্যান্স। ঘটনার প্রতিবাদ করেছিলেন এলাকার এক বাসিন্দা এবং ওই হুল্লোড়ে আটকে পড়া এক অসুস্থ মহিলা। অভিযোগ, স্থানীয় ওই বাসিন্দাকে প্রথমে মারধর করে বরযাত্রীরা। এমনকি, অসুস্থ ওই মহিলাকেও তারা ছাড় দেয়নি। প্রতিবাদ করায় লাঠি দিয়ে মেরে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার রাত দেড়টা নাগাদ এই ঘটনাটি ঘটেছে লিলুয়া থানা এলাকার কোনা হাই রোডে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনা হাই রোডে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে এক স্থানীয় বাসিন্দার মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। রাত ১টার পরে বরকে নিয়ে বিয়ের আসরে আসে পাত্রপক্ষের লোকজন। মাধ্যমিক শুরু হওয়ার আগে থেকে মাইক বাজানোর উপরে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা উড়িয়ে শুরু হয় তারস্বরে ডিজে বাজানো। সেই সঙ্গে চলতে থাকে উদ্দাম নাচ ও শব্দবাজি ফাটানো। অভিযোগ, পাত্রপক্ষের লোকজন ছিল মত্ত অবস্থায়। আচমকা রাস্তার মধ্যে এ ভাবে নাচগান শুরু হয়ে যাওয়ায় কোনা হাই রোড কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রাস্তা জুড়ে এই হুল্লোড় চলতে থাকায় আটকে পড়ে অ্যাম্বুল্যান্স-সহ একাধিক গাড়ি। এর পরেই কেন এ ভাবে বাজি ফাটানো ও নাচগান চলছে, তা নিয়ে প্রতিবাদ করেন স্থানীয় সুভাষপল্লির বাসিন্দা অমিত নন্দী নামে এক ব্যক্তি। অভিযোগ, অমিত প্রতিবাদ করতেই তাঁকে মারধর শুরু করে অভিযুক্তেরা। সেই সময়ে ডাক্তার দেখিয়ে ওই রাস্তা ধরে স্বামী গণেশ সাউয়ের সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন বিরাডিঙির পূর্বপল্লির বাসিন্দা পুতুল সাউ। বহু ক্ষণ আটকে থাকায় তিনিও সকলের সঙ্গে প্রতিবাদে শামিল হন। অভিযোগ, তখন নেশাগ্রস্ত বরযাত্রীরা সবাইকে ছেড়ে ওই মহিলার উপরে চড়াও হয়।
পুতুলের স্বামী গণেশ বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমার অসুস্থ স্ত্রী আক্রান্ত হন। লাঠি দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। আমি বাধা দিতে গেলে আমাকেও রাস্তায় ফেলে পেটায় বিয়েবাড়িতে আসা লোকজন। আমার স্ত্রীর মাথায় চারটি সেলাই পড়েছে।’’
গভীর রাতে এই ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসে লিলুয়া থানার পুলিশ। রাস্তা থেকেই দু’জনকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।