সুপ্রিয় সাঁতরা —ফাইল চিত্র।
মারামারিতে এক ব্যক্তি জখম হয়েছিলেন। যিনি তাঁকে মারধর করেন বলে অভিযোগ, তিনিই আবার উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতাল থেকে বেরোনোর মুখে জখম ব্যক্তির আত্মীয়েরা ওই যুবককে ঘিরে ধরেন। অভিযোগ, মারধরে প্রাণ গিয়েছে সুপ্রিয় সাঁতরা (২৮) নামে ওই যুবকের।
মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে হুগলি জেলার চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালের সামনে। দিনের বেলা জনবহুল এলাকায় এক জনকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় স্তম্ভিত শহরের বাসিন্দারা। এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই এক মহিলা-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। বাকিরাও ধরা পড়বে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন বিকেলে মোটরবাইক নিয়ে ভদ্রেশ্বর স্টেশন রোড ধরে যাচ্ছিলেন বিঘাটির বাসিন্দা, কেব্ল লাইনের কর্মী সুপ্রিয়। স্টেশনের কাছে এলাকারই বাসিন্দা পথচারী উমেশ যাদবের সঙ্গে সুপ্রিয়ের বাইকের সামান্য ধাক্কা লাগে। এর পরে গোলমালে জড়িয়ে পড়েন সুপ্রিয়-উমেশ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পড়ে গিয়ে মাথা ফাটে উমেশের। সুপ্রিয়ই নিজের বাইকে উমেশকে তুলে তড়িঘড়ি ছোটেন চন্দননগর হাসপাতালের দিকে।
হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা হয় উমেশের। তাঁকে রেখে বেরিয়ে আসছিলেন সুপ্রিয়। ইতিমধ্যে হাসপাতাল গেটে জড়ো হয়েছিলেন উমেশের আত্মীয়-পরিজন। অভিযোগ, তাঁরা সুপ্রিয়কে দেখতে পেয়ে ঘিরে ধরে মারধর শুরু করেন। নিস্তেজ হয়ে পড়ে যান সুপ্রিয়। তখন উমেশের বাড়ির লোকজন এলাকা ছাড়েন।
স্থানীয় কয়েক জন সুপ্রিয়কে জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান, তাঁর মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন সুপ্রিয়ের পরিজন। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। হাসপাতালের মূল ফটক আটকে দেয় উত্তেজিত জনতা। আরও পুলিশ আসে পরিস্থিতি সামলাতে।
হাসপাতালে সর্বক্ষণ কেন পুলিশ মোতায়েন থাকবে না, এই প্রশ্ন তোলেন সুপ্রিয়ের বাড়ির লোকজন। তাঁর এক আত্মীয়ের কথায়, “পুলিশ থাকলে ওকে এমন বেঘোরে প্রাণ হারাতে হত না!” হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, সারাক্ষণ পুলিশ মোতায়েন রাখার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে মারধরের ঘটনা হাসপাতালের মূল গেটের বাইরে ঘটেছে।