হাওড়ার পাঁচলা থেকে উদ্ধার হয়েছিল লক্ষ লক্ষ নগদ অর্থ। নিজস্ব চিত্র।
ঝাড়খণ্ড বিধায়কদের জামিনের আবেদন শুনলই না কলকাতা হাই কোর্টের একক বেঞ্চ। বেআইনি টাকা উদ্ধার মামলায় ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়কদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি এবং প্রতারণার দু’টি নতুন ধারা জুড়েছে সিআইডি। নতুন দুই ধারায় বিধায়কদের শাস্তি হলে তার মেয়াদ হবে ১০ বছর। নতুন দুই ধারা জুড়তেই শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের একক বেঞ্চ মামলাটি ছেড়ে দেন। অনুমান এর পর হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে উঠতে পারে বিধায়কদের জামিনের মামলাটি।
হাওড়ায় পাঁচলায় ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়কের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় বৃহস্পতিবারই সিআইডিকে ভর্ৎসনা করেছিল বিচারপতি তীর্থঙ্করের একক বেঞ্চ। মামলাটি ভুল আদালতে চলছে বলে সিআইডিকে দোষারোপ করার পাশাপাশি তাঁর প্রশ্ন ছিল, এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে নিম্ন আদালতের বিচারক কী ভাবে তিন বিধায়ককে হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন? আদালতের ভর্ৎসনার পর সিআইডির গোয়েন্দারা তড়িঘড়ি বিধায়কদের মামলা নিয়ে যান বিশেষ আদালতে। তিন বিধায়কদের বিরুদ্ধে দু’টি নতুন ধারা— ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৬৭ এবং ৪৬৮তে মামলা করার আর্জি জানান। দু’টি ধারা জালিয়াতি ও প্রতারণা সংক্রান্ত আইন। যাতে দোষী প্রমাণিত হলে সাজাপ্রাপ্তের ১০ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। বস্তুত এই দুই ধারা যুক্ত হওয়াতেই বিধায়কদের জামিন মামলাটি আর শুনতে চায়নি আদালতের একক বেঞ্চ। কেন না সাত বছর পর্যন্ত সাজার মেয়াদ থাকলে তার শুনানি একক বেঞ্চে হতে পারে। তার বেশি সাজার ধারা জুড়লেই জামিনের আর্জি স্থানান্তরিত হবে ডিভিশন বেঞ্চে। সেই নিয়মেই হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে বিধায়কদের জামিন মামলার পরবর্তী শুনানি হতে পারে বলে অনুমান।
প্রসঙ্গত, দুর্নীতি দমন আইনে গ্রেফতার তিন ঝাড়খণ্ড বিধায়কের মামলার শুনানি বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ছিল নিম্ন আদালতে মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে। তাঁর এজলাস থেকেই বিধায়কদের দু’বার পুলিশ হেফজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও হাই কোর্ট তা নিয়ে আপত্তি তুলে বৃহস্পতিবার জানায়, এ ধরনের মামলার জন্য বিশেষ আদালত রয়েছে। এবং নিম্ন আদালতের এই মামলায় পুলিশ হেফাজত দেওয়ার এক্তিয়ার নেই। পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিধায়কদের মামলাটি হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে বিশেষ আদালতে তোলা হলে বিশেষ আদালত তিন দিনের পুলিশ হেফজত দেয় ঝাড়খণ্ডের তিন বিধায়ককে।
হাওড়ায় পাঁচলায় তিন ঝাড়খণ্ড বিধায়কের কাছ থেকে উদ্ধারের ঘটনায় কলকাতাতেই টাকার হাতবদল হয়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছিলেন তদন্তকারী সিআইডির গোয়েন্দারা। যার সূত্র ধরে দিল্লি এবং ঝাড়খণ্ডে অভিযান চালায় সিআইডি।