জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। Jyotipriya Mallick
ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সারাটা দিন কেমন কাটল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের? শুক্রবার আদালতে অসুস্থ হয়ে পড়ার পর তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে আসা হয় ওই হাসপাতালে। তার পর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন রেশন বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগে ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়া রাজ্যের বনমন্ত্রী। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বালুর (রাজনৈতিক মহলে এই নামেই সমধিক পরিচিত জ্যোতিপ্রিয়) শারীরিক সমস্যা ঠিক কী, তা জানতে একাধিক পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে। পরিস্থিতি যা, তাতে বালুকে আগামী সোমবার পর্যন্ত ওই হাসপাতালেই ভর্তি থাকতে হতে পারে। শনিবার তাঁকে অর্ধতরল খাবার খেতে দেওয়া হয়েছে। চলছে একের পর এক শারীরিক পরীক্ষা। তবে, রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল বলেই জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অন্য দিকে, জ্যোতিপ্রিয়ের পাশে দাঁড়িয়ে পথে নেমে মিছিল করেছেন রাজ্যের বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ।
কেমন আছেন বালু?
বাইপাসের ধারের বেসরকারি হাসপাতালটি জানিয়েছে, জ্যোতিপ্রিয়ের হাইপারগ্লাইসিমিয়া (রক্তে অত্যধিক শর্করা), রেনাল ইমপেয়ারমেন্ট (কিডনির অসুখ), ডাইসিলেক্ট্রোলিটেমিয়া, প্রি-সিঙ্কোপ (সংজ্ঞা হারানোর অনুভূতি) ইত্যাদি রোগ ধরা পড়েছে। সেই অনুযায়ী চলছে চিকিৎসা। এ ছাড়া, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বা হাইপারটেনশনও রয়েছে মন্ত্রীর। শনিবার সারা দিন বালুর হৃদ্যন্ত্র এবং স্নায়বিক বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষা করা হয়। ডায়াবিটিস এবং মেরুদণ্ডের পরীক্ষাও করানো হবে। তাঁর রক্তে শর্করার মাত্রা অত্যধিক, সে কথা মাথায় রেখে নরম, অর্ধতরল খাবার দেওয়া হচ্ছে। জানা গিয়েছে, মন্ত্রীর ‘হল্টার মনিটরিং’ শুরু করা হয়েছে শনিবার। হৃদ্যন্ত্রের অবস্থা অনবরত নজরে রাখতে এই ব্যবস্থা। হৃদ্স্পন্দন কোন মাত্রায় রয়েছে, তা পরীক্ষার জন্য হল্টার মনিটরিং করা হয়। এ ছাড়া, সোমবার জ্যোতিপ্রিয়ের হৃদ্যন্ত্রের আরও কয়েকটি পরীক্ষা করে দেখা হবে। সে দিন ‘টিল্ট টেস্ট’ করারও পরিকল্পনা রয়েছে। বালুর হৃদ্রোগের সম্ভাবনা আছে কি না, তা বুঝতে এই পরীক্ষা। সূত্রের খবর, শনিবার ইডির কোনও আধিকারিককে হাসপাতাল চত্বরে দেখা যায়নি। তবে ইডি সূত্রে খবর, রবিবার তাদের তদন্তকারী আধিকারিক হাসপাতালে এসে মন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে পারেন।
বাজেয়াপ্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট
রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে এই পদক্ষেপ। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের নির্বাচনী হলফনামায় জ্যোতিপ্রিয় জানিয়েছিলেন, ওই সময় তাঁর ১৫টি সেভিংস ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছিল। রেকারিং ডিপোজ়িট অ্যাকাউন্ট ছিল দু’টি। এ ছাড়াও স্টেট ব্যাঙ্কে জ্যোতিপ্রিয়ের নামে ১২টি ফিক্সড ডিপোজ়িট রয়েছে। ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াতে রয়েছে দু’টি আর একটি সমবায় ব্যাঙ্কে রয়েছে ২০টি ফিক্সড ডিপোজ়িট। নির্বাচনী হলফনামায় বালু আরও জানিয়েছিলেন, তাঁর স্ত্রীর নামে সাতটি সেভিংস ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ফিক্সড ডিপোজ়িট রয়েছে আটটি ব্যাঙ্কে। স্ত্রীর নামেও রয়েছে ছ’টি জীবনবিমা। এ ছাড়া পোস্ট অফিসেও অর্থ গচ্ছিত রয়েছে।
শুভেন্দুর নিশানায় বালুর স্বাস্থ্য?
রাজ্যের বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় যখন বাইপাসের ধারের হাসপাতালে ভর্তি তখন ‘রহস্যজনক’ পোস্ট করে জল্পনা বাড়িয়ে দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি একটি ‘মেডিক্যাল রিপোর্ট’ পোস্ট করেছেন। তাতে রোগীর নামের জায়গায় লেখা রয়েছে, ‘রেশন রবার’। বাংলা তর্জমা করলে হয় রেশন ডাকাত। শুভেন্দুর পোস্ট করা মেডিক্যাল রিপোর্টে আবার ডাকনাম লেখারও জায়গাও রয়েছে। সেখানে লেখা স্যান্ডম্যান অর্থাৎ বালি বা বালুমানব। নীচে বেশ কয়েকটি শারীরিক পরীক্ষার মান দেওয়া রয়েছে। একেবারে তলায় লেখা, ‘‘রিপোর্ট অনুযায়ী— সঙ্কটজনক নন।’’ শুভেন্দু নিজের পোস্টে লিখেছেন, ‘‘বাংলার সবচেয়ে বহুচর্চিত ডায়গনস্টিক রিপোর্টের ঝলক।’’ ওই রিপোর্টে ‘রেশন ডাকাত’, ‘বালুমানব’ শব্দবন্ধ দেখে রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন, শুভেন্দুর ইঙ্গিত জ্যোতিপ্রিয়ের দিকেই। কারণ তাঁর ডাকনাম বালু। শুভেন্দু কারও নাম না করলেও তৃণমূল পাল্টা দিতে দেরি করেনি। ওই রিপোর্ট দেখে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘‘বিজেপির লোডশেডিং নেতা কার রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন আমরা জানি না। তবে এক জন চিকিৎসক হিসাবে বলতে পারি, যে রিপোর্ট তিনি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন, তাতে ওই রোগীর সুগার ও প্যানক্রিয়াসের সমস্যা রয়েছে।’’
প্রাক্তনের হয়ে পথে বর্তমান
জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতার হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিশাল মিছিল করে তার প্রতিবাদ নথিভুক্ত করল তৃণমূল। এককালে উত্তর ২৪ পরগনার ‘শেষ কথা’ বালুর গ্রেফতারির প্রতিবাদে শনিবার পথে নামেন রাজ্যের বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। মধ্যমগ্রাম শহর তৃণমূলের আয়োজনে হওয়া সেই মিছিল থেকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে তীব্র আক্রমণ করা হয়। রেশন দুর্নীতি মামলায় জ্যোতিপ্রিয়ের গ্রেফতারি নিয়ে বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এটা বিজেপির চক্রান্ত।’’ মিছিল থেকে রথীনের প্রশ্ন, ‘‘একশো দিনের কাজ এবং আবাস যোজনা নিয়ে আমাদের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে আন্দোলন করছিলেন, তার অভিমুখ ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য কি এই সব গ্রেফতারি?’’ এর জবাবও তিনি নিজেই দেন। রথীনের কথায়, ‘‘বিজেপি সিবিআই এবং ইডির মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে আমাদের লোকেদের হয়রান এবং হেনস্থা করছে। এর প্রতিবাদে আমরা আন্দোলন করছি।’’
বালুকে ভর্তি নিতে চায় না কম্যান্ড হাসপাতাল
শুক্রবার ব্যাঙ্কশাল আদালতের বিচারক ইডিকে নির্দেশ দিয়ে জানিয়েছিলেন, জ্যোতিপ্রিয়ের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলে এবং তদন্তকারী আধিকারিক মনে করলে বালুকে আলিপুরের কম্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো যেতে পারে। সেই নির্দেশ বদল করার আর্জি জানিয়ে শনিবার আদালতের দ্বারস্থ হন কম্যান্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য, ইতিমধ্যেই হাসপাতালের উপর রোগীর চাপ রয়েছে। তাঁদের যুক্তি, হাসপাতালে সেনাকর্মী, সেনা আধিকারিক এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা হয়। যাঁরা যুদ্ধে যান, দেশের সেবা করেন, মূলত তাঁদের জন্যই কম্যান্ড হাসপাতাল ব্যবহৃত হয় বলে জানান কর্তৃপক্ষ। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে কোনও রোগীকে ভর্তি নেওয়া সম্ভব নয় বলে আদালতে জানান কর্তৃপক্ষ। যদিও এ নিয়ে বিচারকের প্রশ্নের মুখেও পড়েন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অসমর্থিত সূত্রের খবর, এ নিয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছেন কম্যান্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
‘পুরাতন ভৃত্য’
জ্যোতিপ্রিয় নিজে হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও তাঁকে নিয়ে তদন্তে কামাই নেই ইডির। ইডি সূত্রের দাবি, বাড়ির পুরনো পরিচারককে খাদ্য দফতরে সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন বালু নিজেই। পাশাপাশি, দুর্নীতির টাকা লেনদেন হয়েছে এমন সংস্থার ডিরেক্টর পদে ছিলেন ওই পরিচারকের মা এবং স্ত্রী। বৃহস্পতিবার বালুর বাড়িতে ম্যারাথন তল্লাশি থেকে এ সব তথ্য তাঁরা জানতে পেরেছেন বলে দাবি ইডি সূত্রের। ইডি সূত্রে খবর, ২৬ অক্টোবর জ্যোতিপ্রিয়ের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর সময় তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রী-কন্যাকে তিনটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তদন্তকারীদের ধারণা, ওই তিনটি সংস্থার মাধ্যমে ‘কালো টাকা’ লেনদেন হয়েছে। তিন জনেই ওই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ খারিজ করেন। যদিও বাড়িতে তল্লাশির সময় ওই তিন সংস্থার স্ট্যাম্প উদ্ধার করে বাজেয়াপ্ত করেছে বলে দাবি ইডির। সহযোগীরা দাবি করেছেন, ওই তিন সংস্থার মালিকানা রয়েছে জ্যোতিপ্রিয়ের হাতে। ইডির দাবি, তাঁরই নির্দেশে এই সংস্থার ডিরেক্টর করা হয়েছিল পরিচারকের স্ত্রী এবং মাকে।
বালুকাণ্ডে ‘অপা’যোগ!
তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, ২০১৪ সালে একটি বাংলা সিনেমা প্রযোজনা করেছিলেন বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়-‘ঘনিষ্ঠ’, অধুনা ইডির হাতে ধৃত বাকিবুর রহমান। সেই সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। ইডি সূত্রের দাবি, সিনেমার পোস্টারে প্রযোজক হিসাবে বাকিবুরের নাম ছিল। সিনেমাটিতে টলিউডের বেশ কয়েক জন অভিনেতা এবং কলাকুশলী কাজ করেছিলেন। সিনেমার একটি ছোট দৃশ্যে দেখা গিয়েছিল বলিউডের এক অভিনেত্রীকেও। ইডির দাবি, দু’দফায় রাজ্যের বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকে মোট ৮০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন বাকিবুর। ইডি সূত্রের খবর, বাকিবুরের সঙ্গে তাঁর কর্মীদের হোয়াট্সঅ্যাপ চ্যাটে এই টাকা লেনদেনের কথা উঠে এসেছে। তিনি যে তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রীকে টাকা দিয়েছিলেন, ইডির জিজ্ঞাসাবাদের সময়, তেমনটা নাকি স্বীকারও করে নিয়েছেন বাকিবুর। ইডি সূত্র জানিয়েছে, বাকিবুরকে গ্রেফতারির সময় যে মোবাইলগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, তা ঘেঁটেই লেনদেনের বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। প্রকাশ্যে এসেছে ‘এমআইসি’ নামক এক ব্যক্তিকে একাধিক বার টাকা দেওয়ার তথ্যও। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এই ‘এমআইসি’-র অর্থ ‘মিনিস্টার ইন চার্জ’ এবং সেই মন্ত্রী আর কেউ নন, খোদ প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়।
মন্ত্রী সুজিতের গুরুতর অভিযোগ
সতীর্থ গ্রেফতার হওয়ার পরেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করলেন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। দাবি, তাঁর নাম বলিয়ে নেওয়ার জন্য তাঁরই প্রাক্তন আপ্তসহায়ককে চাপ দিচ্ছেন ইডির তদন্তকারীরা। সুজিত বলেন, ‘‘নিতাই আমার আপ্তসহায়ক ছিল। প্রথম বার কাউন্সিলর হয়েছে, এখন পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান। ওঁর বাড়িতে গিয়ে ১২ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি করেছে, কিছুই পায়নি। তার পর এখন আমার নাম বলার জন্য ওর উপর চাপ দেওয়া হচ্ছে। শুধু বলছে সুজিত বসুর নামটা বলে দাও, লিখে দাও, তোমাকে ছেড়ে দেব। এটা কী ধরনের অত্যাচার!’’ প্রসঙ্গত, পুর নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় পুজোর আগেই নিতাইয়ের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছিল ইডি। প্রায় ১২ ঘণ্টা তাঁর বাড়িতে থেকে তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। এ বার সেই অভিযান নিয়েই গুরুতর অভিযোগ করলেন সুজিত।
বাকিবুরের জেল হেফাজত
শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে ইডি দাবি করে, উপরের কারও আশীর্বাদ ছিল ‘মন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ’ বাকিবুরের মাথায়। পাল্টা বাকিবুরের আইনজীবীর দাবি, রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় কোনও এফআইআরে নাম নেই তাঁর মক্কেলের। দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর বিচারক বাকিবুরকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।